ঢাকা শুক্রবার
২৯ মার্চ ২০২৪
২৫ মার্চ ২০২৪

সাইরেন বাজলেই টিভি-ফোন বন্ধ হয়ে যায় এই গ্রামে!


ডেস্ক রিপোর্ট
159

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২ | ১১:১০:১৫ এএম
সাইরেন বাজলেই টিভি-ফোন বন্ধ হয়ে যায় এই গ্রামে! ফাইল-ফটো



বর্তমানে মোবাইল ফোন ও টিভি মানুষের ওপর আধিপত্যও বিস্তার করে চলেছে! এই দুটি যন্ত্রে আসক্তি কমিয়ে মানুষ যাতে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে, সেজন্য ব্যতিক্রমী পন্থা বেছে নিয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্রের একটি গ্রাম।

সন্ধ্যা ৭টা বাজলেই গ্রামটিতে বেজে ওঠে সাইরেন। আর এরপরই একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সব গ্রামবাসীকে মোবাইল-টিভি থেকে থাকতে হয় দূরে। আবার রাত সাড়ে ৮টায় ফের সাইরেন বাজালে চালু করা যায় এই আধুনিক ডিভাইসগুলো।

প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি আসক্তি কমিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে কথাবার্তা বাড়াতে এমন অভিনব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্রের সাঙলি জেলার ভাদগাঁও গ্রামে।

গ্রামের বাসিন্দা বন্দনা মোহিতে জানান, তার দুই সন্তান মোবাইলে গেম খেলা ও টিভির প্রতি এত আসক্ত যে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গ্রামে নতুন নিয়ম চালু হওয়ার পর থেকে তার স্বামীও কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে সন্তানদের লেখাপড়ায় সাহায্য করেন। ফলে বন্দনা নিজেও স্বস্তিতে রান্নাঘরের কাজ সেরে নিতে পারেন।

তবে ডিজিটাল দুনিয়ার অন্যতম আসক্তি থেকে সবাইকে দূরে রাখাটা সহজ ছিল না গ্রাম্য কাউন্সিলের জন্য। বিজয় মোহিতে জানান, কাউন্সিল যখন এই সমস্যাটি নিয়ে আলাপ করে এবং নতুন সিদ্ধান্তে আসে, তখন গ্রামের পুরুষেরা উপহাস করেছিল। তখন তারা গ্রামের সব নারীদের ডেকে আনেন এবং তাদের মতামত জানতে চান। নারীরা অকপটে স্বীকার করেন যে টিভি সিরিয়াল দেখা ও মোবাইলের পেছনে তাদের অনেকটা সময় ব্যয় হয়। গ্রামের নারীরা সবাই চান যে পুরো গ্রামে কয়েক ঘন্টার জন্য যেন টিভি-মোবাইল বন্ধ রাখার নিয়ম করা হয়।

এরপর আরেকটি সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে গ্রামের মন্দিরে ওপর সাইরেন লাগানো হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে তা বাজানো হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাও সহজ ছিল না। সাইরেন বন্ধ হয়ে গেলেও কাউন্সিলের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি টহল দিতেন এবং সবাইকে বলতেন মোবাইল-টিভি বন্ধ রাখতে।

ভারগাঁও গ্রামের আখচাষী দিলীপ মোহিতের স্কুলগামী তিন ছেলে রয়েছে। তিনি জানান, গ্রাম্য কাউন্সিলের নেওয়া সিদ্ধান্তের ফলে তাদের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। তার ভাষ্যে, "এখন আমার সন্তানরা পড়াশোনায় আগের চেয়ে বেশি মনোযোগী হয়েছে। এখন প্রাপ্তবয়স্করা মোবাইলের বাইরেও, নিজেদের মধ্যেও কথাবার্তা বলে।"


আরও পড়ুন: