ঢাকা শুক্রবার
২৯ মার্চ ২০২৪
২৬ মার্চ ২০২৪

তুরস্ক-সিরিয়াতে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়াল


ডেস্ক রিপোর্ট
154

প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৬:০২:২৪ পিএম
তুরস্ক-সিরিয়াতে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়াল ফাইল-ফটো



তুরস্কের দক্ষিণ এবং সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে হু হু করে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৬০০ ছাড়িয়েছে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়া নিউজ।

[caption id="attachment_9646" align="aligncenter" width="762"]ফাইল-ফটো ফাইল-ফটো[/caption]

এদিকে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র তুরস্কেই ৯১২ জনের মৃত্যুর কথা জানা গেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া সিরিয়ায় নিহত হয়েছে ৭ শতাধিক লোক। আহত পাঁচ হাজারের বেশি।

এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন অনেকে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, আরেও অনেক বাড়তে পারে প্রাণহানি। স্থানীয় সময় ভোররাতে অনুভূত হয় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার কম্পন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ। বিপুল এ প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ ও শোক জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।

[caption id="attachment_9647" align="aligncenter" width="770"]ফাইল ফটো ফাইল ফটো[/caption]

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরের আলো না ফুটতেই সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে ছড়ায় আতঙ্ক। জোরালো কম্পনে ধসে পড়ে সুউচ্চ দালানকোঠা। ঘুমের মধ্যেই ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়েন বহু মানুষ।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে প্রথম কম্পনটি অনুভূত হয়। যার স্থায়িত্ব ছিল ৪৫ সেকেন্ডের মতো। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল তুরস্কের সীমান্তবর্তী শহর গাজিয়ানতেপ। এর উৎপত্তি ছিল ভূ-ভাগ থেকে ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে।

স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এখনও কয়েক হাজার মানুষ ভাঙা ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে আছে। আমার বন্ধুর মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু, পরিবারের বাকি সদস্যরা নিখোঁজ। আতঙ্ক নিয়ে অপেক্ষা করছি।

আরেক ব্যক্তি বলেন, স্ত্রীর ডাকে তড়িঘড়ি ঘুম থেকে উঠি। মনে হচ্ছিল, কেয়ামত হচ্ছে! সবকিছু দুলছে। চিৎকার-কান্না চারপাশে। চোখের সামনেই ভেঙে পড়ে ঘরবাড়ি। কোনোভাবে প্রাণে বেঁচেছি।

ভূমিকম্পের ধাক্কা অনুভূত হয়েছে রাজধানী আঙ্কারাসহ আরো ১০ তুর্কি শহরে। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে অনুভূত হয় অন্তত ৪২টি আফটারশক। যার সবগুলোই ছিল ৬ মাত্রা বা তার ওপর। কম্পনে ভেঙে পড়েছে বহু ঘরবাড়ি-স্থাপনা। দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু হলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছে বহু বাসিন্দা।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোইলু জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০টি শহর- গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিস। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সময়ের সাথে বাড়বে হতাহতের সংখ্যা।

তিনি বলেন, ভোর সোয়া চারটা নাগাদ হয়েছে শক্তিশালী ভূমিকম্প। কেন্দ্র গাজিয়ানতেপে হলেও, রাজধানীসহ কমপক্ষে ১০ শহরে অনূভূত হয় কম্পন। অনেকগুলো আফটারশক রেকর্ড করা হয়, যা শুধুই ধ্বংস ডেকে এনেছে। কেন্দ্রীয় সরকার, প্রত্যেক রাজ্য প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড, উদ্ধারকর্মীরা সবাই তৎপর। দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় কাজ করছে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রেড ক্রিসেন্টও। সময়ের সাথে বাড়বে প্রাণহানি।

উদ্ধারকর্মীরা বলছেন, সিরিয়ার ভূখণ্ড বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাণহানিও সেখানে বেশি। মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সীমান্তের আজমারিন শহর। তাছাড়া, ক্ষয়ক্ষতির শিকার আলেপ্পো, লাতাকিয়া ও হামা শহরও। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোয়াইট হেলমেটের দাবি, ধ্বংসাবশেষ সরানো গেলে বাড়বে প্রাণহানি। প্রতিবেশী লেবানন আর সাইপ্রাসেও অনুভূত হয়েছে কম্পন।

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা বরাবরই ভূমিকম্প প্রবণ। ১৯৯৯ সালে, শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রাণ হারান ১৭ হাজারের বেশি মানুষ। এর আগে ১৯৩৯ সালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পের আঘাতে ৩৩ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।


আরও পড়ুন: