ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
২১ এপ্রিল ২০২৪

চার হাজার বন্দি পালানোর পর হাইতিতে কারফিউ জারি


ডেস্ক রিপোর্ট
83

প্রকাশিত: ০৫ মার্চ ২০২৪ | ০৪:০৩:২৯ পিএম
চার হাজার বন্দি পালানোর পর হাইতিতে কারফিউ জারি ফাইল-ফটো



হাইতির বৃহত্তম দুই কারাগার থেকে প্রায় চার হাজার বন্দি পালিয়ে যাওয়ার পর কারফিউ এবং জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সরকার। বেশ কয়েকটি গ্যাংয়ের সদস্যদের মধ্যে সহিংসতার পর কারাগার দুটি থেকে প্রায় চার হাজার বন্দি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।

এক বিবৃতিতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সান্ধ্য আইন সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং এই সান্ধ্য আইন রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত চলবে। অবস্থার প্রেক্ষিতে উভয় পদক্ষেপের মেয়াদ বাড়তে পারে।

কারফিউ কার্যকর করতে এবং সব অপরাধীকে গ্রেফতারে সব ধরনের আইনি উপায় ব্যবহার করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

হাইতির অর্থমন্ত্রী প্যাট্রিক বোইসভের্ত বলেন, ‘কারফিউ কার্যকর ও সব অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সমস্ত আইনি উপায় ব্যবহারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

গত শনিবার গভীর রাতে দেশটির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স এর কারাগারে একটি সশস্ত্র দল হামলা চালিয়ে ১২ জনকে হত্যা করে। এই সময় ওই কারাগার থেকে ৪ হাজার বন্দি পালিয়ে যায়।

ওই হামলার পর রবিবার কারাগারের দরজা খোলা ছিল এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কোনও চিহ্ন সেখানে ছিল না বলে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। তবে পালানোর চেষ্টা করা তিন বন্দি কারাগারের আঙিনার মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়েছিল বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সশস্ত্র দলটি বলছে তারা, দেশের বাইরে থাকা প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে চান।  

পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় আশি শতাংশের নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে এই দলটির হাতে।  

হাইতির এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, সপ্তাহান্তে রাজধানীতে এবং ক্রোয়েক্স ডেস বুকেটের কাছাকাছি দুটি কারাগারে হামলার ঘটনা ঘটেছে।  

পোর্ট-অ-প্রিন্সের কারাগারটিতে ২০২১ সালের রাষ্ট্রপতি জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গ্যাং সদস্যরা বন্দি ছিলেন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি হাইতিতে কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে নাইরোবি গেলে, গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশটিতে সহিংসতা শুরু হয়।

সশস্ত্র দল বা গ্যাংয়ের নেতা জিমি চেরিজিয়ার যিনি "বারবিকিউ" নামে বেশি পরিচিত; প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে অপসারণের জন্য একযোগে সশস্ত্র আক্রমণের ঘোষণা দেন।

মন্বিত আক্রমণ চালানোর ঘোষণা দেওয়ার পর গোলাগুলিতে চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। পরে হাইতির ফরাসি দূতাবাস রাজধানী এবং এর আশপাশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়।

একজন স্বেচ্ছাসেবক কারাগার কর্মী রয়টার্সকে বলেছেন, ৯৯ জন বন্দি - যার মধ্যে সাবেক কলম্বিয়ান সৈন্যরাও রয়েছেন যারা প্রেসিডেন্ট মোয়েসের হত্যার জন্য জেলে ছিল - ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ভয়ে কারাগারে থাকাকেই বেছে নিয়েছিল।

মূলত সাবেক প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মোয়েসের হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হাইতিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত কাউকে করা হয়নি এবং ২০১৬ সাল থেকে ক্যারিবীয় অঞ্চলের এই দেশটিতে নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়নি।

যদিও একটি রাজনৈতিক চুক্তির আওতায় হাইতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবং অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি গত ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করার কথা ছিল, কিন্তু সেটি হয়নি।


আরও পড়ুন: