ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
৩১ অক্টোবর ২০২৪

নিশ্চিত বিজয়ের পথে পুতিন


ডেস্ক রিপোর্ট
180

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২৪ | ১১:০৩:২৯ এএম
নিশ্চিত বিজয়ের পথে পুতিন ফাইল-ফটো



রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এখন পর্যন্ত ৯৫ শতাংশেরও বেশি ভোগ গণনা করা হয়েছে।বিরোধীদের ব্যাপক নীরব প্রতিবাদ ও ধরপাকড়ের মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তৃতীয় তথা শেষ দিনের ভোট হয়েছে গতকাল রবিবার। গণনাকৃত ভোটের মধ্যে পুতিন এককভাবে পেয়েছেন ৮৭ শতাংশের বেশি ভোট। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা তাসের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।


এর মধ্যে দিয়ে ১৯৯৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাশিয়ায় ২০০ বছরের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী শাসক হতে যাচ্ছেন পুতিন। 

গতকাল বাংলাদেশ সময় মধ্যরাত পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল ঘোষণা শুরু হয়নি। তবে মধ্যরাতের পর (বাংলাদেশ সময়) ভোট শেষ হলে রাশিয়ার জনমত জরিপ প্রতিষ্ঠান ভিসিআইওএম জানায়, এক্সিট পোল অনুযায়ী ৮৭ শতাংশ ভোটার পুতিনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আরেকটি জরিপে পুতিন ৮৭.৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলে দেখা যায়।

শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। রবিবার সবশেষ দেশটির সবচেয়ে পশ্চিমে বাল্টিক সাগরের তীরে কালিনিনগ্রাদ অঞ্চলে ভোটগ্রহণ হয়। এরপর বুথ ফেরত জরিপের ফল প্রকাশ করে রাশিয়ার সরকারি জরিপ সংস্থা ভিটিএসআইওএম। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার আগে এ জরিপ করা হয়।

লৌহমানব পুতিন নিশ্চিতভাবেই আরেকবার বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন বলেই পর্যবেক্ষকমহলসহ সবাই আগে থেকেই ধারণা করছিলেন।
এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে দেখা হচ্ছিল ভ্লাদিমির পুতিনকে আরেকবার প্রেসিডেন্ট করার নিছক নিয়ম রক্ষার ভোট হিসেবে। গতকাল রাশিয়ার শহরগুলোতে ৭০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি প্রয়াত বিরোধী নেতা আলেক্সাই নাভালনির স্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভোটকেন্দ্রের বাইরে প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হয়েছিল তারা।

বেশির ভাগ স্পষ্টবাদী পুতিন সমালোচক নির্বাসিত, কারাগারে আটক বা মৃত হওয়ায় ৭১ বছর বয়সী রুশ প্রেসিডেন্টের পুনর্নির্বাচিত হওয়া অনিবার্য হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

ভোটের প্রথম দুই দিনে ভোটকেন্দ্রে ভাঙচুরের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়ার দখল করে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলেও ভোট হয়। এলাকাগুলো হচ্ছে জাপোরিঝিয়া, খেরসন, দোনেত্স্ক ও লুহানস্ক। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার দূতাবাসগুলোতে ভোটগ্রহণ চলে।
‘পুতিনের বিরুদ্ধে দুপুর’ নামের এক কর্মসূচি ডেকেছিলেন বিরোধী নেতা আলেক্সাই নাভালনির বিধবা স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া। এতে সাড়া দিয়ে মধ্যাহ্নে রাশিয়ার বেশ কিছু ভোটকেন্দ্রে লোকজন দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ায়। ইউরোপসহ বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক দেশেও পুতিনবিরোধীরা দুপুরের প্রতিবাদে অংশ নিতে ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ায়। তবে রুশ সরকার একে দাবি করেছে ভোটের বৈধতার প্রতি নাগরিকদের সমর্থনের প্রমাণ বলে।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাসের প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, এবার ভোটদানের হার ৬৭.৫৪ শতাংশ, যা ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চেয়ে সামান্য বেশি। এ বছর চূড়ান্ত ফল ২৮ মার্চ প্রকাশিত হবে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

সোভিয়েত আমলের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির একজন সাধারণ কর্নেল থেকে সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলিসনের ডান হাত ও পরে উত্তরসূরি হন ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর ক্ষমতায় উত্থানের গল্পটি পুরো শাসনামলের মতোই চমকপ্রদ। পুতিন প্রায় সিকি শতাব্দী ধরে প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সোভিয়েত আমলের একনায়ক জোসেফ স্তালিনের পর আধুনিক রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নেতা।


আরও পড়ুন: