ঢাকা মঙ্গলবার
৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ইসরায়েলকে জর্দানের সহায়তাঃনাগরিকদের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া


ডেস্ক রিপোর্ট
40

প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১১:০৪:৩২ এএম
ইসরায়েলকে  জর্দানের সহায়তাঃনাগরিকদের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ফাইল-ফটো



ইরান থেকে ইসরায়েলে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়। এগুলো যেন ইসরায়েল পর্যন্ত না পৌঁছে সেই চেষ্টা করে জর্দান। আত্মরক্ষার জন্য এটি করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জর্দান সরকার। ‘কারণ এগুলো আমাদের জনগণ ও জনবহুল এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ ছিল’বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জর্দানের নাগরিকরা তাদের সরকারের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছে। হুসেইন নামে দেশটির একজন রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট বলেন, ‘জর্দান যেভাবে ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে তাতে আমি খুবই বিরক্ত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখানকার অনেকেই এটা মেনে নিচ্ছে না।
আমরা ইরানকে সমর্থন করি না এবং গাজায় এখন যা ঘটছে তার পেছনে ইরানের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করি। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করা যেকোনো পদক্ষেপের সঙ্গে আমরা আছি।’

আম্মানের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘জর্দানে ইরানের জনপ্রিয়তা নেই। কিন্তু আমি ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্রে জর্দানের বাধা দেওয়া ও অনিচ্ছাকৃতভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া প্রত্যাখ্যান করি। উল্লেখ্য, জর্দানের রানিসহ প্রতি পাঁচজনের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত।

আম্মানের সামরিক বিশ্লেষক মাহমুদ রিদাসাদ ডিডাব্লিউকে বলেন, সপ্তাহান্তে যে ঘটনা ঘটেছে তাকে ‘কখনো ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে তেমনটা বলা যাবে না, বরং জর্দানের সার্বভৌমত্ব ও আকাশসীমা রক্ষার জন্য করা হয়েছে’। কারণ ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র কোথায় পড়বে তা জানা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে জর্দান সহায়তা করেছে বলে ইসরায়েলের গণমাধ্যমে খুশির খবর প্রকাশ সম্পর্কে রিদাসাদ বলেন, ‘এটা ইসরায়েলের প্রোপাগান্ডা ছাড়া কিছু নয়।’

ব্রাসেলসভিত্তিক থিংকট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশ্লেষক তাহানি মুস্তফা ডিডাব্লিউকে জানান, সপ্তাহান্তের ঘটনা নিয়ে জর্দানের নাগরিকরা বিভক্ত।এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে জর্দানের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক নিয়ে মানুষ বিস্তারিত জানে না। এসব বিষয় নিয়ে এখানে বেশি লেখা হয় না।’
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও জর্দানের মধ্যে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই হয়েছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে জর্দানের সংসদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে। এই চুক্তির আওতায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্য, পরিবহন ও বিমান বাধা ছাড়াই জর্দানে ঢুকতে ও ঘুরে বেড়াতে পারবে। গাজা নিয়ে আম্মানে বিক্ষোভ শুরুর পর অনেকে জর্দান থেকে মার্কিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে শুরু করেন বলে ডিডাব্লিউকে জানান মুস্তফা।

কয়েক সপ্তাহ ধরে আম্মানে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। তারা ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্দানের মধ্যে সই হওয়া শান্তিচুক্তি বাতিলেরও আহ্বান জানায়।


আরও পড়ুন: