জুলাইয়ে হ্যারিসের নির্বাচনী তহবিলে ৩১ কোটি ডলার

যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে প্রচারে নেমে পড়েছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস। এরই মধ্যে এক সপ্তাহের প্রচারণায় ২০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছেন তিনি।  

প্রার্থিতা চূড়ান্ত করতে আগামী মাসে অনলাইনে ভোট করবে ডেমোক্রেটিক পার্টি। এরপর দলের পক্ষ থেকে এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
গত মাসে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি বিতর্কে ভালো করতে পারেননি বাইডেন। এর পর থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পদ থেকে তার সরে দাঁড়ানোর দাবি বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় গত রোববার জো বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তিনি হ্যারিসকে নতুন প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন। এর পর থেকে তিনি দলটির নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর সামনে চলে আসে কমলা হ্যারিসের নাম। নির্বাচনে কমলা হ্যারিস রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখোমুখি হচ্ছেন, এটা এখন অনেকটাই নিশ্চিত।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ১০০ দিন বাকি। হ্যারিসের প্রচার দলের উপব্যবস্থাপক রব প্ল্যাহার্টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া একে পোস্টে বলেন, আমরা এক সপ্তাহ ধরে প্রচার শুরু করেছি। এর মধ্যে কমলা হ্যারিস ২০ কোটি ডলার তুলে ফেলেছেন। দাতাদের ৬৬ শতাংশই নতুন। আমরা ১৭ হাজার নতুন স্বেচ্ছাসেবীর সই পেয়েছি। শুধু তা-ই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও বারাক ওবামা এবং সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির মতো প্রভাবশালী নেতারা কমলা হ্যারিসকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, জনপ্রিয়তায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছেন কমলা হ্যারিস। 

সম্প্রতি হ্যারিসের জন্য ৯০ মিনিটের একটি জুম বৈঠক হয়েছে। এতে প্রায় ২০ লাখ ডলার নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দিবাগত রাতে এই জুম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এদিন রাতেই ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলাকে সমর্থন দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। বিশিষ্ট রাজনৈতিক কর্মী শ্যানন ওয়াটস জুম বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকটির নাম দেয়া হয় ‘হোয়াইট উইমেন: অ্যানসার দ্য কল’। এতে অংশ নেয়া সব নারীই ছিলেন শ্বেতাঙ্গ। বৈঠকে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে পপ তারকা পিংক, অভিনেত্রী কনি ব্রিটনসহ অনেকে অংশ নেন। তারা কমলার সমর্থনে কথা বলেন। শ্যানন জুম বৈঠকে কমলার যোগ্যতার নানা দিক তুলে ধরেন।

লাইভস্ট্রিম বা সরাসরি সম্প্রচারিত বৈঠকে প্রথম দফায় এক লাখ ৩৬ হাজারের বেশি নারী যোগ দেন। একসঙ্গে এত বেশি মানুষ জুম বৈঠকে যোগ দেয়ায় সম্প্রচারে সমস্যা হচ্ছিল। কথা ভেঙে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে জুম বৈঠক বন্ধ হয়ে হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে আবার শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত বৈঠকে অংশ নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় এক লাখ ৬৪ হাজার। এর আগে জুমের আর কোনো বৈঠকে একসঙ্গে এক লাখের বেশি মানুষ যোগ দেয়ার কোনো রেকর্ড নেই। অনুষ্ঠানটি ইউটিউবেও অনেকে সরাসরি দেখেছেন।এদিকে ইউরোপেও হ্যারিসের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলা হ্যারিসের সম্ভাব্য প্রার্থিতা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে। ইউরোপের গণতান্ত্রিক কর্মীরা এমনটাই দাবি করেছেন।
সূত্রঃ ডয়চে ভেলে