ঢাকা শুক্রবার
০৩ মে ২০২৪
৩০ এপ্রিল ২০২৪

নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের ৬ মাসের কারাদণ্ড ঘোষণা


ডেস্ক রিপোর্ট
149

প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারী ২০২৪ | ০৪:০১:৫০ পিএম
নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুসের ৬ মাসের কারাদণ্ড ঘোষণা ফাইল-ফটো



শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ ৪ জনকে ছয়মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

রায়ে বিবাদীদের ছয়মাসের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ হাজার টাকা জরিমানা এবং আপিল করার শর্তে ১ মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য তিন বিবাদী হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

সোমবার (১ জানুয়ারি) এর আগে, দুপুর ২টা ১৫ মিনিটের দিকে ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার ৮৪ পৃষ্ঠার এ রায় ঘোষণা শুরু করেন। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে তিনিসহ চার আসামিরা আদালতে হাজির হন। ৩টার দিকে এই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহান।

আলোচিত এ মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর পক্ষে ও বিপক্ষে উভয়ের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। বছরজুড়েই শ্রম আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার কারণে বিদেশের সভা-সেমিনারেও যেতে পারেননি তিনি। সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর শ্রম আদালতে নজিরবিহীন ১৩ দিনের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর রায়ের জন্য নতুন বছরের প্রথম দিন তথা সোমবার ধার্য করেন আদালত।

সেদিন আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ইউনুস সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বা আমরা কোনো অন্যায় করিনি, তাই আশা করি; সত্যই প্রমাণিত হবে। শিগগিরই এই মামলা থেকে খালাস চাই; কারণ আমাদের নির্দোষ প্রমাণ করার কিছু নেই। আমাদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ আনা হয়েছে- সব মিথ্যা।”

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে ড. ইউনুসসহ চারজনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলা বাতিলের আবেদন নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতেও গিয়েছিলেন ইউনুস। কিন্তু গত মে মাসে তার আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে গেলে মামলা চালানোর বাধা দূর হয়। 

৩৪২ ধারার আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্যে ইউনুস বলেছিলেন, শ্রম আইনের ২৩৪ ধারার বিধান লঙ্ঘিত হলে ২৩৬ ধারায় অনেকগুলো প্রতিকারের বিধান রেখেছে। শ্রম আইনের ২৩৬ ধারার উপরোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ না করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বিবাদী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ আইনের লঙ্ঘন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।আমি নিজের স্বার্থে কোনো কিছু করিনি। আমি অপরাধ করিনি।”

সেদিন শুনানি শেষে ইউনুস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমি তো নিজে এ প্রতিষ্ঠানের মালিক নই। আমার আদর্শ কর্মসূচিতে কোনো ত্রুটি ছিল না। এত বড় কাজ করতে গেলে কিছু ভুল হতে পারে। আমরা তো ফেরেশতা নই। কিন্তু ভুল হলে তা ইচ্ছাকৃত নয়।”


আরও পড়ুন: