ঢাকা শুক্রবার
০৩ মে ২০২৪
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কুয়াশা-হিমেল বাতাসে স্থবির জনজীবন


ডেস্ক রিপোর্ট
121

প্রকাশিত: ১৫ জানুয়ারী ২০২৪ | ০১:০১:২১ পিএম
কুয়াশা-হিমেল বাতাসে স্থবির জনজীবন ফাইল-ফটো



মাঘের প্রথম দিন আজ। শুরু হলো বাঘ পালানো শীত। হাড়কাঁপা শীতে নাজেহাল পরিস্থিতিতে পড়েছে দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়া। টানা দুই দিন শৈত্য প্রবাহের পর সামান্য বেড়েছে তাপমাত্রা। তবে শীতের তীব্রতায় নাকাল এ জনপদের মানুষ। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এর আগে ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিকের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়া অফিস জানায়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এছাড়া, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, দিনাজপুর, বরিশাল ও ভোলাসহ জেলাগুলোর উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় থেকে প্রশমিত হতে পারে।

এর আগে, রোববার (১৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসের দাপটে শীতে বিপর্যস্ত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গত ১২ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার পর দুই দিন ১৩ জানুয়ারি ৯.৩ ও ১৪ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়েছে এ জেলায়। 

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি জানান তেঁতুলিয়ার প্রথম শ্রেণির পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।

গত এক সপ্তাহের মতো ভোর থেকে আজও ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে ঝরাচ্ছে শীতের তাণ্ডব। রাতভর কুয়াশার সাথে হিমেল শিশিরের মতো ভোর থেকে ঝরছে বৃষ্টির মতো শিশির। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। 

উত্তরের জেলা দিনাজপুরে ছয় দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। দিনে কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে সড়ক ও মাঠঘাট। রাতেও বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা, সঙ্গে বইছে কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া। কুয়াশার কারণে অনেক বেলা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি বছরে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল।

উত্তরের আরেক জেলা রংপুরে ঘন কুয়াশার ও হিমেল হাওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। পাঁচ দিন ধরে বেশির ভাগ সময়ই আকাশ থাকছে মেঘাচ্ছন্ন। রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, সরকারিভাবে প্রায় ৬০ হাজার কম্বল ও গরম কাপড় বিতরণ করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র শীতের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে আসছেন না। তীব্র শীতে নিম্ন আয়ের অনেকেরই উপার্জন কমে গেছে। কনকনে ঠাণ্ডায় কৃষকরা কাদাপানিতে নেমে ধান রোপণ করতে পারছেন না।

নওগাঁর বদলগাছীতে তিন দিন ধরে সূর্যের মুখ দেখা মিলছে না। সন্ধ্যার পর থেকেই বৃষ্টির মতো পড়তে থাকে ঘন কুয়াশা। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে রাস্তাঘাট। সকালেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলছে।

কুড়িগ্রামে টানা ছয় দিন দেখা মেলেনি সূর্যের। হিমেল হাওয়া, মেঘলা আকাশ ও ঘন কুয়াশার কারণে ঠাণ্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনপদ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামীকাল মঙ্গলবার দিনের তাপমাত্রা বাড়লেও রাতের তাপমাত্রা থাকতে পারে প্রায় অপরিবর্তিত। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।


আরও পড়ুন: