ঢাকা মঙ্গলবার
২২ অক্টোবর ২০২৪
১৫ অক্টোবর ২০২৪

প্রথম স্ত্রীর ও দুই সন্তানের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মতিউর


ডেস্ক রিপোর্ট
143

প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২৪ | ১০:০৬:৩১ এএম
প্রথম স্ত্রীর ও দুই সন্তানের নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন মতিউর ফাইল-ফটো



ছেলের ছাগলকাণ্ডের পর থেকে আলোচিত রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে পাওয়া যাচ্ছে নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি অর্জনের খোজ।মতিউর রহমানের দাবি, তার সব সম্পদ বৈধ এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে আসা মুনাফার মাধ্যমে অর্জিত। তবে অনুসন্ধানে তার দুই সন্তান অর্ণব ও ইপসিতার নামে পুঁজিবাজার এবং এর বাইরের প্রায় ডজনখানেক কোম্পানির অংশীদারত্বের নথিপত্র এসেছে।

মতিউর রহমান সরকারি চাকরি করে দুই স্ত্রী, পাঁচ সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনের নামে গড়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ। এরই মধ্যে দেশেই প্রায় ৫০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের হদিস মিলেছে। ঢাকা, গাজীপুর, সাভার, নরসিংদী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, জমি, ফ্ল্যাট-প্লট, রিসোর্ট রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে এফডিআর ও শেয়ারবাজারে নিজ নামে অর্ধশত কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে। ছাগলকাণ্ডে আলোচিত পুত্রকেও কিনে দিয়েছিলেন প্রাডো, প্রিমিও ও ক্রাউনের মতো চারটি বিলাসবহুল গাড়ি। এসব গাড়ি তাঁর বিভিন্ন কম্পানির নামে রেজিস্ট্রেশন করা। কিনে দিয়েছেন দামি পাখিও। তাঁর পরিচিত কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, বেনামে এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকাতেই অন্তত দুই ডজন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে মতিউর রহমানের স্ত্রী-সন্তান ও ঘনিষ্ঠদের নামে। সাহাবুদ্দিন পার্কের পাশে ৮৩ নম্বর রোডের ১১ নম্বর প্লটে আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের বেগ পার্ক ভিউতে রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। সেখানেই প্রথম স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চেয়ারম্যান লায়লা কানিজকে নিয়ে সপরিবারে বাস করতেন। দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার থাকেন লালমাটিয়ার ৮ নম্বর রোডের ৪১/২ ইম্পেরিয়াল ভবনে। কাকরাইলেও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ছোট স্ত্রীর নামে। এ ছাড়া ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে একাধিক ফ্ল্যাটের হদিস পাওয়া গেছে। বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ডেভেলপার কম্পানি শান্তা ডেভেলপারের করা বিভিন্ন ভবনে তাঁর আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব ফ্ল্যাট প্রথম স্ত্রীর সন্তান ফারজানা রহমান ঈপ্সিতা ও ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে কেনা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আইনগত ঝামেলা এড়াতে নিজের স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনের নামে সম্পদ গড়েছেন মতিউর রহমান। টঙ্গীতে ৪০ হাজার বর্গফুটের এসকে ট্রিমস নামের ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং ও অ্যাকসেসরিজ কারখানা রয়েছে তাঁর। যদিও কাগজে-কলমে কারখানার মালিক তাঁর ভাই এম এ কাইয়ুম হাওলাদার। ময়মনসিংহের ভালুকায় ৩০০ বিঘা জমিতে গ্লোবাল শুজ নামের দুটি জুতা তৈরির কারখানা রয়েছে। নরসিংদীর রায়পুরায় ওয়ান্ডার পার্ক অ্যান্ড ইকো রিসোর্ট রয়েছে। এসব রিসোর্টের মালিকানায় আছেন তাঁর ছেলে ও মেয়ে। এ ছাড়া পূর্বাচলে আপন ভুবন পিকনিক অ্যান্ড শুটিং স্পটের মালিকও তিনি।

গাজীপুর সদর এলাকায় ১৭১ নম্বর এসএ দাগে ১০.৫০ শতাংশ, ১৭২ নম্বর এসএ দাগে ৩.৯০ শতাংশ, ১৬৩ নম্বর এসএ দাগে ৭.৫০ শতাংশ, ১৬৩ নম্বর এসএ দাগে ৬ শতাংশ, ১৭০ নম্বর এসএ দাগে ৬ শতাংশ, ১৬৩ নম্বর এসএ দাগে ৭ শতাংশ এবং ১৭০ নম্বর দাগে ৬ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৩০৩৫, ১৭৬৩ ও ১৭৬২ নম্বর দাগে ১২.৫৮ শতাংশ জমির খোঁজ পাওয়া গেছে। এই আটটি খতিয়ানে রয়েছে তাঁর ৬০ শতাংশ জমি। স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৩৬৯৬ নম্বর এসএ দাগে ১৪.০৩ শতাংশ, গাজীপুরে ৪৮.১৬ ও ১৪.৫০ শতাংশ এবং ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে ০.৪৫১৬২৫ একর জমি রয়েছে।


আরও পড়ুন: