ঢাকা বৃহস্পতিবার
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জ্বালানি সংকটে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন,বেড়েছে লোডশেডিং


ডেস্ক রিপোর্ট
22

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১০:০৯:৩৫ এএম
জ্বালানি সংকটে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন,বেড়েছে লোডশেডিং ফাইল-ফটো



জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চাহিদা ও সরবরাহের ঘাটতি সমন্বয় করতে নিয়মিত লোডশেডিং করতে হচ্ছে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। ফলে রাজধানীসহ সারা দেশে বাড়ছে লোডশেডিং। চলমান তীব্র তাপদাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন।যদিও শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে বেশি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না।

সরজমিনে দেখা যায়,রাজধানীতে দিনে গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হলেও গ্রামাঞ্চলে সেটা দ্বিগুন।উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে। গ্যাস সংকট ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন হচ্ছে।এ ব্যাপারে বিতরণ কোম্পানিগুলো বলছে, চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎও মিলছে না। তাই লোডশেডিং বেড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্ষতি হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বিদ্যুৎ বিতরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দৈনিক প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টায় ১ হাজার ৮৭৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। গত রোববারও (৮ সেপ্টেম্বর) দেশে গড়ে ১ হাজার ২৯১ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।

মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৩ হাজার ৫৯৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ আছে। জ্বালানি সংকটে দেশে ৬ হাজার ২৮৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। বিদ্যুতে প্রতিদিন গড়ে ৮৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস দেওয়া হচ্ছে, যা এপ্রিলে ছিল ১৩৫ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় গ্যাসের সরবরাহ কমেছে। পেট্রোবাংলা প্রতিদিন সরবরাহ করছে ২৫৯ ঘনফুট গ্যাস।জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি কমেছে। ত্রিপুরা থেকে ঘণ্টায় ১৬০ মেগাওয়াটের স্থানে ৬০ থেকে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ভেড়ামারা দিয়ে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসার কথা থাকলেও মিলছে ৮৮০ মেগাওয়াট। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও ৪০০ মেগাওয়াট কম আসছে।

পিজিসিবির তথ্যমতে, গতকাল বেলা ৩টায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট। আর বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১২ হাজার ৭৮৮ মেগাওয়াট। দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট।

কুড়িগ্রামঃ
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) এর  তথ্যমতে, শনিবার জেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬৮ মেগাওয়াট। আর বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩৮ মেগাওয়াট। ঘাটতি পূরণে ৮টি ফিডে রুটিন করে লোডশেডিং দিতে হয়েছে।
হবিগঞ্জঃ
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। দিনের তুলনায় রাতে  লোডশেডিং হচ্ছে বেশি। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস জানায়, বানিয়াচং উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট। আর পাওয়া যাচ্ছে ৯ থেকে ১০ মেগাওয়াট।
রংপুরঃ
রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়ায় গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। উত্তরের ১৬ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকো মিলে বিদ্যুতের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। কিন্তু দু’দিন ধরে সরবরাহ মিলছে ১ হাজার ৭০০  থেকে ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। রংপুর বিভাগের আট জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকো মিলে চাহিদা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াটের কম বিদ্যুৎ।
রাজশাহীঃ
রাজশাহী বিভাগে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সরবরাহ কম থাকায় ঘন ঘন লোডশেডিং দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। 


আরও পড়ুন: