ঢাকা শনিবার
২৭ এপ্রিল ২০২৪
২২ মে ২০২৩

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জমে ওঠেছে মিরপুরের ফুটপাত মার্কেটের বেচাকেনা


ডেস্ক রিপোর্ট
73

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১০:০৩:৪৫ এএম
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জমে ওঠেছে মিরপুরের ফুটপাত মার্কেটের বেচাকেনা ফাইল-ফটো



আর কিছুদিন বাদেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ আনন্দে শামিল হতে সিয়াম পালনকারীরা পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পোশাক-আশাক কিনতে ব্যাস্ত থাকেন।
বড় বড় শপিং মল থেকে শুরু করে রাস্তার ধারে ফুটপাতে রোজার শেষ কয়েকদিন ব্যাপক বেচা-কেনা হয়।কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে এবারের ঈদে,রাজধানীর মিরপুরের ফুটপাতগুলোতেও বেচা-কেনা চলছে ব্যাপক হারে।মানুষজন প্রখর রোদ ও তীব্র গরম উপেক্ষা করে প্রিয়জনদের জন্য পোশাকসহ নানা পণ্য কিনছেন।
 
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে মিরপুর ১নং গোল চত্বরের চারপাশের ফুটপাতগুলোয় এ চিত্র দেখা যায়। ফুটপাতগুলোয় তিল ধারণের জায়গা নেই। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে চলছে দরদাম। দরদাম মিললেই নিজ নিজ পছন্দের পণ্য কিনে নিচ্ছেন ক্রেতারা।

অন্য বছরের তুলনায় এবার বাজারের আকার বেড়েছে। খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে পণ্যের দাম,বলছেন জামা কিনতে আসা ক্রেতারা। এরপরও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিপণি বিতানগুলোতে ভিড় লেগেই আছে ক্রেতার। তৈরি পোশাকের অর্ডার দেওয়ার সময় ও সুযোগ শেষ। তাই মার্কেট ও ফুটপাতে কেনাকাটা বেড়ে জমজমাট অবস্থা।

বুধবার সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ নম্বরের হোপের গলিতে প্রচুর ক্রেতার আনাগোনা দেখা যায়। ফুটপাত ও অস্থায়ী ভ্যানে অনেকেই ঈদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। রঙিন পোশাক আর আলোর ঝলকানিতে সে সব পণ্য আকৃষ্ট করছে ক্রেতাদের।
এক ক্রেতা জানান, মার্কেটে যেসব কাপড় পাওয়া যায়, একই রকম কাপড় ভ্যানগাড়িতেও বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু দামের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। কমদামে পাবো বলেই ফুটপাতে আসা। কিছু ক্রেতার অভিযোগ ছোটদের জামা কাপড়ের দাম ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। আগে যেটা ২০০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন তা ৪০০ টাকার ওপরে।

রাজধানীর মিরপুর-১০ হোপের গলির পাশেই বেনারসী পল্লীর বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে। সন্ধ্যায় এসব দোকানে তেমন ভিড় দেখা যায়নি। অনেক নারীর অভিযোগ গতবারের চেয়ে এবার দাম বেশি চাচ্ছেন শাড়ি ব্যবসায়ীরা। তবে পাশেই রয়েছে নান্নু মার্কেট। নিম্নবিত্তদের এই মার্কেটে যাতায়াত বেশি। পণ্যের সম্ভারে প্রতিটি দোকান যেন ঠাসা। সেই সঙ্গে ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। দোকানিরা জানান, এবার বাজার মন্দ নয়। কেনাবেচা বেশ ভালো। ঈদকে কেন্দ্র করে দিন যত আগাবে, ততই বেচাকেনা বৃদ্ধি পাবে।

অল্প দামে পছন্দের পোশাক, গয়না, জুতা, স্যান্ডেল প্রসাধনীসহ ঈদের পণ্য কিনতে নিম্ন আয়ের মানুষের কেনাকাটায় ব্যস্ততা বেড়েছে। ভিড় জমেছে ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসানো অস্থায়ী দোকানে। রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মূলত নিম্নআয়ের লোকজনকে কেন্দ্র করে এ এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে প্রচুর দোকান খোলা হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি অনেক নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকজনও তাদের দোকানে কেনাকাটার জন্য আসছেন। সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ফুটপাতগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। এ বছর পাঞ্জাবিসহ বাচ্চাদের জামা ভালোই বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ফুটপাতগুলোতে মেয়েদের পোশাক, শিশুদের পোশাক, প্রসাধনী, জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ট্রাউজার, জুতা, বেল্ট, ক্যাপ, লুঙ্গি, মানিব্যাগসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, শপিংমলে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি, সবার সাধ্যও নেই। তাই ফুটপাতের স্টলে কেনাকাটা করছেন অনেকে। ক্রেতাদের চাপে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত হাজার-হাজার মানুষের পদচারণায় মুখর থাকছে ফুটপাত ও পুরো মার্কেট এলাকা।

তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় থাকে দুপুরের পর থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত। তখন মানুষের ভিড়ের কারণে ঠিকমতো হাঁটার জায়গাও পাওয়া যায় নাক্রেতারা জানান, ঈদের আর বেশিদিন বাকি নেই। প্রস্তুতি বাকি অনেক। মার্কেটে পোশাকসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। ঈদ যত এগিয়ে আসবে, দাম আরও বাড়বে। সে কারণে একটু আগেভাগেই কেনাকাটার ঝোঁক রয়েছে অনেকের।

রাজধানীর মিরপুরের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অস্থায়ী দোকানগুলোতে কেউ চৌকি পেতে, কেউ কাঠের টেবিল বা ভ্যানের ওপর, কেউ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে, আবার কেউ চাদর বিছিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাকের সঙ্গে প্রসাধনী সামগ্রী সাজিয়ে রেখেছেন। ঈদকে কেন্দ্র করে পণ্যের সম্ভারও রয়েছে বেশ।মিরপুর ১০নং ফুটপাতের দোকানি মিলন জানান, এবার বাইরের পরিবেশ গরম থাকায় ফুটপাতে ব্যবসায় সমস্যা কম হচ্ছে।এরপরেও ক্রেতাদের আনাগোনাও বেড়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে চাঁদা ও হয়রানির অভিযোগ করেন তিনি।


আরও পড়ুন: