ঢাকা মঙ্গলবার
৩০ এপ্রিল ২০২৪
২৮ এপ্রিল ২০২৪

দেশে হতে যাচ্ছে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র


ডেস্ক রিপোর্ট
63

প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০:০৪:০৩ এএম
দেশে হতে যাচ্ছে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফাইল-ফটো



পাবনার রূপপুরে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পর এবার দেশে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ মঙ্গলবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে রূপপুরেই দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে অংশ নিতে রাশিয়া থেকে অ্যালেক্সি লিখাচেভ গতকাল সোমবার ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন। বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আলেক্সি লিখাচেভ তাঁর বক্তব্যে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাইলস্টোন অর্জিত হতে যাচ্ছে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। বর্তমানে আমরা নতুন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় আরও দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আলেক্সি লিখাচেভ বলেন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাল্টিপারপাস গবেষণা রিঅ্যাক্টর নির্মাণের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। গবেষণা রিঅ্যাক্টর বিজ্ঞান ও নিউক্লিয়ার মেডিসিনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমাধান দিতে সক্ষম। গত সোমবার ঢাকায় আসেন রসাটমের মহাপরিচালক। এরপর তিনি নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও গ্রিন সিটি আবাসিক এলাকা পরিদর্শন করেন। রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মিত হচ্ছে। প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। সর্বাধুনিক ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর স্থাপিত হচ্ছে প্রতিটি ইউনিটে। প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও ঠিকাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে রসাটমের প্রকৌশল শাখা।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুরে নতুন দুইটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট (ইউনিট-৩ এবং ইউনিট ৪) রাশান ফেডারেশনের সহায়তায় নির্মাণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নতুন দুইটি ইউনিট স্থাপনের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে কারিগরি সমীক্ষা পরিচালনা করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রোসাটমের ডিজি নতুন দুইটি ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু করতে উক্ত কারিগরি সমীক্ষা দ্রুততম সময়ে শুরু করার প্রস্তাব করেন। রোসাটম মহাপরিচালক রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ১২০০ মেঘাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি ইউনিট ২৪০০ মেগাওয়াট-এর নির্মাণ কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রথম ইউনিটের চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শুরু হবে। ইউনিট-১ এবং ইউনিট-২ হতে আগামী ২০২৫ এবং ২০২৬ সালে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। রোসাটম মহাপরিচালক বলেন, নতুন ইউনিট-৩ এবং ইউনিট ৪-এর নির্মাণ কাজ প্রথম দুইটি ইউনিটের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে শুরু করা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন যে, বিদ্যমান পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সম্প্রসারণ আর্থিক দৃষ্টিকোণ এবং কারিগরি ও পারমাণবিক নিরাপত্তার আলোকে অধিকতর লাভজনক এবং যুক্তিযুক্ত যা আন্তর্জাতিকভাবে বিবেচিত।
প্রধানমন্ত্রী রূপপুর পারামাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটে ব্যবহৃত পারমানবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নিতে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। রোসাটমের ডিজি প্রথম এবং দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদিত ব্যবহৃত পারমানবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশেনে ফেরত নেয়ার বিষয়ে রাশান সরকারের পক্ষে নিশ্চয়তা প্রদান করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবহৃত পারমানবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নেয়ার যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা যথাসময়ে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবহৃত পারমানবিক জ্বালানি রাশান ফেডারেশনে ফেরত নেয়ার বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার ও রাশান ফেডারেশন সরকার আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তি সই করেছে।রোসাটম মহাপরিচালকও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পৌঁছে দেন।
সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।


আরও পড়ুন: