ঢাকা শুক্রবার
২৯ মার্চ ২০২৪
২৬ মার্চ ২০২৪

বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড হলেও গ্রামে লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তি


ডেস্ক রিপোর্ট
155

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৩ | ১১:০৪:২৯ এএম
বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড হলেও গ্রামে লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তি ফাইল-ফটো



দেশব্যাপী চলা তীব্র তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। রাজধানী ঢাকায় লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় থাকলেও সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। গ্রামের এই লোডশেডিং শুধু দিনে নয়, রাতেও ভোগাচ্ছে। এমনকি সন্ধ্যায় ইফতারের সময় ও শেষ রাতে সেহরির সময়ও বিদ্যুৎ থাকছে না। এদিকে বিদ্যুতের দাবিতে ফেনীর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে হামলা করেছে স্থানীয় গ্রাহকরা। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে ঈদের আগে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। তাপমাত্রা না কমলে, ভোগান্তি কমবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় গরম বেশি। এখন তাপদাহ চলছে। এর ফলে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। এসি ও ফ্যান চলছে বেশি। একই সঙ্গে রমজান ও সেচের জন্য এমনিতেই এ সময়টাতে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে সারা দেশেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকাকে লোডশেডিং মুক্ত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ৫৫ শতাংশ তাদের অধীনে। গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে গ্রাম এলাকাতেও। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাটতি বেশি হচ্ছে। রাতেও হচ্ছে কিছু কিছু। 

আরইবির তথ্য বলছে, গত রোববার তাদের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ৯ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট। একই সময়ে সরবরাহ করা হয়েছে ৭ হাজার ৭৬৬ মেগাওয়াট। লোডশেডিং করা হয়েছে ১ হাজার ৭৮৪ মেগাওয়াট। গত বছর একই দিনে আরইবি লোডশেডিং করেছে মাত্র ১৩৩ মেগাওয়াট। গত শনিবার সর্বোচ্চ দুই হাজার ২২৯ মেগাওয়াট লোডশেডিং করেছে আরইবি। 

সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং করা হয়েছে খুলনা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে। এরপর বেশি লোডশেডিং হয়েছে রাজশাহী, রংপুর, কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলে। ঢাকা বিভাগে লোডশেডিং ছিল নামমাত্র। আর বরিশাল অঞ্চলে কোথাও তেমন লোডশেডিং করা হয়নি।

কারিগরি সমস্যা ঢাকায়
রাজধানী ঢাকাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। এ দুটি সংস্থার তথ্য বলছে, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদামতো সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন আধুনিকায়ন করা হয়নি।

তাই এখন বাড়তি সরবরাহ নিতে পারছে না কোনো কোনো বিদ্যুৎ বিতরণ ট্রান্সফরমার। আকস্মিকভাবে ট্রিপ (বন্ধ হয়ে যাওয়া) করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গতকাল ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ায় ভোর থেকে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিলেন বনশ্রী এলাকার মানুষ। গ্রীষ্মে ডেসকোর সর্বোচ্চ চাহিদা থাকে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। এবার ১ হাজার ২৯১ মেগাওয়াট পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে। এ সময় ডিপিডিসির স্বাভাবিক চাহিদা থাকার কথা ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয়েছে ১ হাজার ৮৬৫ মেগাওয়াট।

গরমের কারণে অনেকে নতুন করে এসি বসাচ্ছেন। এতে অনুমোদনের চেয়ে বেশি লোড ব্যবহার করছেন বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা। ফলে গ্রাহকের লাইন চাপ নিতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও তাই ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ না পেয়ে লোডশেডিংয়ের অভিযোগ করছেন গ্রাহকেরা।


আরও পড়ুন: