ঢাকা শুক্রবার
২৬ এপ্রিল ২০২৪
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সেন্ট মার্টিন জুড়ে মোখার ক্ষত, ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা


ডেস্ক রিপোর্ট
182

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৩ | ১২:০৫:৫৯ পিএম
সেন্ট মার্টিন জুড়ে মোখার ক্ষত, ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ফাইল-ফটো



প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পূর্ব পাশের জেটি ঘাট দিয়ে একটু এগিয়ে গেলেই মূল বাজার। যে বাজারে প্রবেশ করতেই দেখা মিলে ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষত। অনুমানিক সাড়ে ৩০০ দোকান নিয়ে বাজারটির পাকা দোকানগুলো অক্ষত থাকলেও আধা পাকা এবং টিন শেড দোকানের ছাউনি উপড়ে গেছে। কিছু কিছু দোকান ভেঙে গেছে আংশিক।
সোমবার বিকেল ৫টার দিকে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালিকরা কিছুটা ভাঙা অংশ সংস্কারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বাজারের কয়েকটি দোকানও খুলেছে। যে দোকান ঘিরে মানুষের আনাগোনা বলে দিচ্ছে প্রয়োজনীয় মালামাল বা উপকরণ কিনছেন দ্বীপের মানুষ।

ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হলেও গতকাল দুপুর পর্যন্ত প্রশাসন থেকে কোনো ধরনের সহায়তা মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। অবশ্য দুপুর সোয়া ১টায় স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহীন আক্তারের স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি স্পিডবোটে করে সেন্ট মার্টিনে যান। পরে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দ্বীপটির প্রায় এক হাজার ৮০০ নারী-পুরুষকে নগদ অর্থ সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ টাকা বিতরণ করেন বলে জানান স্থানীয় চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।

বিকেল ৫টার পর পর জেটি ঘাটে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে দ্বীপের মানুষকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হবে। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ে মূল আঘাত হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এর বাইরে টেকনাফ উপজেলায় কিছু ক্ষতি হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১ হাজার ঘর, টেকনাফের অন্যান্য উপকূলীয় এলাকায় ৩ হাজার ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখায় জেলায় ১০ হাজার কাঁচা বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ২ হাজার ঘর বাড়ি। শুধু সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১২০০ কাঁচা বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ঝড়ো হাওয়ায় সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সাবরাং এলাকায় গাছ পালা উপড়ে যায়। তবে মোখায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। জেলা প্রশাসক আরো জানান এটি একেবারেই প্রাথমিক হিসাব।

ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের ঘর বাড়ি ছাড়াও বেশ কয়েকটি মসজিদ ও হোটেল রিসোর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু কিছু কাঁচা ও আধা পাকা ঘর বাড়ি একেবারে মাটির সাথে মিশে গেছে।
কক্সবাজার জেলার উপকূল এলাকায় ৬৩৬টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে দুই লাখ ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব কমে যাওয়ায় আশ্রয় নেয়া অধিকাংশই গতকাল তাদের বাড়ি ঘরে ফিরে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দারা আজ সকালে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে গেছে।
সাগর এখনো উত্তাল থাকায় সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের সাথে এখনো নৌ যোগাযোগ শুরু হয়নি। সেন্টমার্টিন্স দ্বীপে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন পানীয়জল খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কায় স্থানীয়রা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায় ঘূর্ণিঝড় মোখায় উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ইতোমধ্যে মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।


আরও পড়ুন: