ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
২৯ অক্টোবর ২০২৪

উড়িষ্যার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল?


ডেস্ক রিপোর্ট
288

প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২৩ | ১২:০৬:৫১ পিএম
উড়িষ্যার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল? ফাইল-ফটো



ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ওড়িশা রাজ্যে একাধিক ট্রেন ও মালগাড়ির সংঘর্ষে ২৮৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯০০ জনের বেশি। ট্রেনের ভেতর থেকে একের পর এক মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। ভেতরে আটকা পড়েছেন অনেকেই। ফলে নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওডিশার বালাসোর জেলার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

শনিবার (৩ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। ওড়িশার মুখ্য সচিব প্রদীপ জেনা বলেছেন, বালাসোর জেলায় ২০০টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

রাজ্যে আজ এক দিনের শোক ঘোষণা করেছেন ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তিনি। ট্রেনের দরজা ভেঙে ও গ্যাস কাটারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। নামানো হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও।

ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন দেশটির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবসহ রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার কারণ জানতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জল্পনা।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওডিশার বাহাঙ্গাবাজার এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে পড়েছিল। চেন্নাইগামী শালিমার–চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ওই এলাকা পেরিয়ে যাওয়ার সময় লাইনচ্যুত ট্রেনের বগির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।

তবে পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকা স্থানীয় একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, প্রথমে করমণ্ডল এক্সপ্রেসই তীব্র গতিতে গিয়ে ধাক্কা মারে একই লাইনে সামনে চলতে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। ২৩টি কামরার মধ্যে ১৫টি কামরা লাইন থেকে ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে ও নয়ানজুলিতে।

সেই লাইন দিয়ে তখন আসছিল ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত কামরাগুলো গিয়ে পড়ে ডাউন লাইনের উপর। বেঙ্গালুরু-হাওড়া ডাউন ট্রেনটি সেই বেলাইন কামরাগুলোর উপর এসে পড়ে। হাওড়াগামী সেই ট্রেনটিরও দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়।

এদিকে ভারতের কেন্দ্রীর রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব টুইট করে জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার জন্য ভারতীয় বিমানবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছেন।

দুর্ঘটনার খবরে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি টুইট করে বলেছেন, ‘ওডিশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহত ব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। পরিস্থিতি নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গেও কথা বলেছি।

উদ্ধারকাজে নেমেছেন ভারতের ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফোর্সের (এনডিআরএফ) সদস্যরা। রয়েছে ওডিশা ডিজাস্টার র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সও (ওডিআরএএফ)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এখনো অনেকে ট্রেনের ভেতরে আটকা পড়ে আছেন।

দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ রুপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মোদি। পাশাপাশি আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ও গুরুতর আহতদের ২ লাখ রুপি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।


আরও পড়ুন: