ঢাকা বৃহস্পতিবার
০২ মে ২০২৪
১৭ মার্চ ২০২৪

বয়সের ছাপ প্রথমেই ফুটে ওঠে হাতে


ডেস্ক রিপোর্ট
101

প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১০:১২:৫১ এএম
বয়সের ছাপ প্রথমেই ফুটে ওঠে হাতে ফাইল-ফটো



নরম-কোমল ও সুন্দর হাত সবারই পছন্দ। কারো দিকে তাকালে প্রথমেই চেহারার দিকে চোখ যায় তারপর হাতের দিকে। আর সেই হাতই যদি রোদে পোড়া বা কালো দেখায় তাহলে নিজের কাছেই দেখতে খারাপ লাগে। আবার পরিবেশের নানা ক্ষতিকর উপাদানের সংস্পর্শে এসে হাত শুকনো, আর্দ্রতা-হীন ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। আর বিশেষ করে শীতের মৌসুমে ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে রুক্ষ হয়ে যায়। সুন্দর থাকার প্রথম শর্ত হচ্ছে ত্বকের যত্ন। তবে ত্বককে দাগহীন রাখা খুব বেশি সহজ হয় না। কারণ আমরা সারা দিনের বেশিরভাগ সময়টাই ঘরের বাইরে থাকি, এছাড়াও অনেক কাজেই আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। সময় বের করে মুখের যত্ন নেয়া হলেও খুব একটা হাতের যত্ন নেয়া হয় না। অনেক সময় চোখে পড়ে যে মুখের সঙ্গে হাতের রং মিলছে না। এই সমস্যাটা রোদে পুড়লে বেশি হয়। হাতে বাদামি ও এক ধরনের ছোপ পড়ে। আঙ্গুলের মাঝে, গোড়ালিতে ও নখে কালো ছোপ পড়তে দেখা যায়।
ত্বক সুস্থ রাখার জন্য আমরা সবাই ক্লিনজিং টেনিং ময়শ্চারাইজিংয়ের রুটিন তো মেনে চলি। মুখে বয়সের ছাপ, বলিরেখা আটকাতে আমাদের চেষ্টারও কোনও ত্রুটি থাকে না! কিন্তু মুখের ত্বক নিটোল রাখতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই শরীরের অন্য অঙ্গগুলোকে আমরা অবহেলা করে থাকি। অথচ সেই অংশগুলোতেও কিন্তু বয়সের ছাপ স্পষ্ট করে ফুটে ওঠতে পারে।
সারাদিন বিভিন্ন কাজে হাতের ব্যবহার হয়। ফলে হাতে পড়ে শুষ্ক, রুক্ষ ও অনেক ক্ষেত্রে ফাটা ভাব।
রুক্ষ হাতে ত্বকের সুরক্ষার স্তর ব্যাহত হয়। ত্বকের আর্দ্রতা হ্রাস পায়। ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়ে হাতের কোমলভাব। আর এই সমস্যা আরও প্রকট হয় শীতের শুষ্কতায়।
শুষ্ক ও রুক্ষ হাতের কারণ
পারিবেশিক অবস্থা যেমন- শুষ্ক বাতাস, তীব্র গরম বা শীতের শুষ্ক বাতাস ও ব্যক্তিগত ত্বক পরিচর্যার জন্য যেমন- অতিরিক্ত হাত ধোয়া বা পর্যাপ্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করা- এসব কারণেই হাত শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে।
এছাড়া তরল সাবান ও ডিটার্জেন্টের প্রভাবেও এরকম হতে পারে।
এই বিষয়ে রিয়েল-সিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ড্যান্ডি ইঙ্গেলম্যান বলেন, “অনেক তরল সাবানে থাকে সোডিয়াম ল-রিয়াল সালফেট নামক উপাদান যা ত্বককে অনেক বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ করে ফেলে। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ত্বক আরও বেশি পানিশূন্য হয়ে যায়।”
১. খুব বেশি হাত ধোয়া: মৃদু, সালফেট মুক্ত সাবান দিয়ে হাত ধোয়াও হাতকে রুক্ষ শুষ্ক করে ফেলতে পারে।
নিউ ইয়র্ক’য়ের আরেক নিবন্ধিত ত্বক বিশেষজ্ঞ রায়ান টার্নার বলেন, “ঘন ঘন পানি, বিশেষ করে অনেক বেশি গরম পানি দিয়ে হাত ধোঁয়া ত্বকের সুরক্ষার স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।”
২. হাতের কাজ বেশি করা: ডা. টার্নার বলেন, “নির্দিষ্ট কিছু কাজে হাতের ব্যবহার বেশি হয় যেমন- কেউ যদি শারীরিক পরিশ্রম করে অথবা ঘরের কাজ করে এমনকি সেলুনে কাজ করেন তাহলে ক্ষতিকর কোনও রাসায়নিক উপাদান হাতের সংস্পর্শে এসে জ্বলনি সৃষ্টি করে এবং ত্বক শুষ্ক করে ফেলে।”
৩. শুষ্ক বাতাস: যখন বাতাস শুষ্ক থাকে বাকি সবকিছু শুষ্ক হয়ে যায় যেমন চুল, শরীর এবং হাত ঠাণ্ডা। আর শীতকালে বাতাস অনেক বেশি সুস্থ থাকে এবং ঘরের ভেতরে কৃত্রিম তাপমাত্রা সৃষ্টির ফলে অনেক ক্ষেত্রে শুষ্কতার সৃষ্টি করে থাকে। 
৪. একজিমা: এই দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ জনিত ত্বকের সমস্যা থেকে ত্বকে চুলকানি, খসখসে-ভাব সংবেদনশীলতা ও রুক্ষতা দেখা দেয়। ফলে চামড়া ওঠা এবং খসখসে অনুভূতি হয়- ডা. টার্নার।

হাত কোমল করার উপায়
হাতে কোমল ভাব বজায় রাখার অন্যতম উপায় হল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। আর যতটা সম্ভব শুষ্ক বাতাস থেকে সুরক্ষিত থাকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এছাড়াও হাত ধোয়ার ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে।
১. হ্যান্ড স্যানিটাইজার এড়িয়ে চলা: হাত সুরক্ষিত রাখতে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার প্রচুর।
তবে ডা. টার্নার বলেন, “যদি হাতের ত্বকের শুষ্কতার সমস্যা হয়ে থাকে তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ঘন ঘন ব্যবহার না করাই শ্রেয়।”
তিনি জানান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার উচ্চ যৌগের অ্যালকোহল সমৃদ্ধ। এতে হাত পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি হাতের শুষ্কতাও দেখা দেয়।
তাই হাত পরিষ্কার রাখতে এর পরিবর্তে কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত ধোয়া এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। 
২. অতিরিক্ত গরম পানি এড়িয়ে চলা: গরম পানি দিয়ে গোসল বা হাত ধোয়া আরামদায়ক মনে হলেও তা আসলে ভালো অভ্যাস নয় বরং হাতের জন্য ক্ষতিকর।
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘শাফের ক্লিনিক ফিফথ অ্যাভিনিউ’য়ের সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ এডিটা জ্যারস বলেন, “খুব বেশি গরম পানির সংস্পর্শে না যাওয়া এবং মৃদু তাপমাত্রায় থাকা বেশি উপকারী।”

৩. হাত শুকানোর জন্য না ঘষা: হাত শুকানোর জন্য তোয়ালেতে হাত না ঘষে বরং আলতোভাবে চাপ দিয়ে পানি মুছে নেওয়ার পরামর্শ দেন, ডা. টার্নার।
এতে করে হাত অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ঘর্ষণের ফলে হাত এক্সফলিয়েট হয় এবং ত্বকের ওপরের স্তর থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়।


আরও পড়ুন: