ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পেটের মেদ কমাতে যেসব সবজি উপকারী


ডেস্ক রিপোর্ট
204

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী ২০২৪ | ০২:০১:৪৬ পিএম
পেটের মেদ কমাতে যেসব সবজি উপকারী ফাইল-ফটো



দেহের গড়ন তেমন মোটা নয়, কিন্তু তারপরও পেটে দেখা দিয়েছে মেদ। বর্তমানে এই ধরনের চিত্র হরহামেশাই দেখা যায়। এই সমস্যার মূল কারণ আমাদের জীবনযাপনের ধরন।

কর্মব্যস্ত জীবনে সময়ের অভাবে ব্যায়াম করতে না পারা কিংবা অসচেতনতার কারণে পেটে মেদ জমে যায়। তবে এমন কিছু খাবার আছে যেটি পেটে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ দূর করতে সহায়তা করবে।

পালংশাক:
সবুজ পালংশাক পুষ্টিতে ভরপুর। এটা সালাদ, অল্প ভেজে অথবা যে কোনো প্রোটিনের স্মুদিতে ব্যবহার করা যায়। পুষ্টিবিদদের মতে খাবার তালিকায় পালংশাক যোগ করা পেটের মেদ কমাতে সহায়ক। পুষ্টিবিদ কোর্টনি ডি’অ্যাঞ্জেলো বলেন, “পাতাবহুল গাঢ় সবজি কেবল পুষ্টিকর নয় বরং পেটের মেদ কমাতেও কার্যকর।” পালংশাকে আছে আঁশ, যা হজমে সহায়তা করে, অন্ত্র ভালো রাখে। উচ্চ মাত্রায় থাকা ভিটামিন কে দেহের ওজন কমাতে ও জমে থাকা মেদ ঝরায়।

গাজর: 
একই গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ অংশগ্রহণকারীরা পেটের মেদ কমাতে সহায়ক সবজি হিসেবে গাজর ও ব্রকলিকে নিয়মিত গ্রহণ করেছিলেন। গাজরে আছে লুটেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং পেটের মেদ কমানোর কোষের ওপর ভূমিকা রাখে। কম ক্যালোরির খাবার ও মেদ কমাতে পারে- এই দুই কারণেই মেদ ঠেকানোর খাবারে গাজর থাকবে প্রথম সারিতে। ফাইবারে ঠাসা গাজরের রস নিয়ম মেনে খেতে পারলে কমবেই ভুঁড়ি। 

ব্রকলি:
এই সবজিতে যেমন অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ প্রচুর, তেমনই এতে ফাইবার থাকে। ফটোকেমিক্যালে ভর্তি এই সবজিতে বিভিন্ন খনিজ লবণ ও ভিটামিন থাকে। তাই ব্রকলিতে ভরসা রেখে ঝরান মেদ। ক্যালিফোর্নিয়ার’র ‘কেক স্কুল অফ মেডিসিন’ পরিচালিত গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, ব্রকলি পেটের মেদের জন্য উপকারী। নিয়মিত গাঢ় সবজি খাওয়া (ব্রকলি, কেইল, পালং শাক) অতিরিক্ত ওজনের ল্যাটিনো তরুণ অংশগ্রহণকারীদের পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করেছে।”

শশা:
এই ফলের বেশির ভাগটাই পানি। গোটাটাই ফাইবার আর পানিতে ভর্তি। তাই ডিটক্সিফিকেশন তো হয়ই সঙ্গে ফাইবারের আধিক্যে খিদেও কমায়। শরীরের মেদ কমাতে তাই মেনুতে রোজ রাখুন শশা। টক দইয়ের সঙ্গত পেলে এই ফল আরও ভাল কাজ করে।

লাল ক্যাপ্সিকাম:
“ক্যাপ্সিকাম ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আদর্শ সবজি”, বলেন ট্রিস্টা বেস্ট। “এতে ক্যালরির পরিমাণ কম এবং পুষ্টির মাত্রা বেশি। তাই খাবারের সাথে এই ধরনের মরিচ খাওয়া দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে এবং অধিভোজনের ঝুঁকি কমায়।” লাল ক্যাপ্সিকামে রয়েছে উচ্চমাত্রার কেরাটিনয়েডস যা লাইকোপিন নামে পরিচিত। আর ক্যারোটিনয়েডস সমৃদ্ধ সবজি পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করে।

মুলা:
মুলা শুনলেই নাক কুঁচকে উঠবেন না। এটা খেলে পেটে গ্যাস হয়—এই ধারণা থেকে অনেকেই মুলা খাওয়া এড়িয়ে চলেন। কিন্তু মুলা হজম ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। পাশাপাশি পেটের মেদ গলাতে সাহায্য করে। শীতকালে সালাদ হিসেবে মুলা খেতে পারেন। কিংবা সবজির তরকারিতেও মুলা দিতে পারেন।

ক্যাপ্সিকাম:
লুটেন সমৃদ্ধ সবজির মধ্যে রয়েছে কমলা ও হলুদ রংয়ের ক্যাপ্সিকাম। এর উজ্জ্বল রং, মজাদার স্বাদ সবজি হিসেবে খাওয়া পেটের মেদ কমাতে সহায়তা করে। ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশন’য়ে প্রকাশিত গবেষণায় উল্লেখ করা হয়- কম ক্যালরি বহুল খাবার, লুটেনের সম্পূরক অংশগ্রহণকারীদের ওপর ইতিবাচক ভূমিকায় রেখেছিল। যারা পরিপূরক হিসেবে লুটেন গ্রহণ করেছিল তাদের কোমরের মাপ, পেটের মেদ, দেহের ওজন, দেহের চর্বি ও এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পেয়েছিল।

কেইল:
এটা এক ধরনের পাতাবহুল সবুজ সবজি যা পুষ্টিতে ভরপুর। এতে আছে ভিটামিন এ, কে, সি এবং বি৬। এছাড়াও ম্যাগনেসিয়াম, কপার এবং পটাসিয়ামের ভালো উৎস। আরও আছে আঁশ ও প্রোটিন। প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৪৩ ক্যালোরি পাওয়া যায়। গবেষণায় বলা হয়েছিল, গাঢ় সবুজ শাকসবজি পেট ফোলাভাব কমায়। খাবার তালিকায় এমন সবজি যোগ করা উপকারী।

বিটরুট:
বিটরুট বা বিট উচ্চ জলীয় ও স্বল্প আয়তনসমৃদ্ধ। এক ধরনের কন্দ ধরনের সবজি যা পুষ্টিতে ভরপুর। পেটের মেদ কমাতে ও ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে বিট খাওয়া উপকারী। এটা উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ। প্রতি এক কাপ বিটে প্রায় ৩.৮ গ্রাম আঁশ পাওয়া যায়। খাবারে অথবা নাস্তায় পর্যাপ্ত আঁশ খাওয়া পেটের ফোলাভাব কমায়, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং পেট ভরা অনুভব করায়। বিটরুট ভিটামিন এ, বি, সি এবং খনিজ উপাদান পটাশিয়াম, লৌহ ও ফোলায়েট সমৃদ্ধ।

লেবু:
প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির সঙ্গে মধু ও লেবু মিশিয়ে খান। খাবার হজম ও পেটের মেদ কমানোর ক্ষেত্রে এটি ভাল ভূমিকা রাখবে।


আরও পড়ুন: