ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পালংশাকের গুণাগুণ


ডেস্ক রিপোর্ট
217

প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০২৪ | ০৩:০১:২৬ পিএম
পালংশাকের গুণাগুণ ফাইল-ফটো



শীতকাল মানেই নতুন শাক-সবজি। বাজারে গেলেই চোখে পড়বে বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি ফল-মূল। এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো পালং শাক। এটি খেতে খুব মজাদার।

পালংশাকে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন, ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস থেকে শুরু করে পিগমেন্টস। তাই পালংশাককে একরকম ‘সুপার ফুড’ বলা যায়। ত্বকের সুরক্ষা বিভিন্ন ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট্স ও পিগমেন্টের উপস্থিতি ত্বককে ক্ষতিকর ইউভি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা দেয় এবং ত্বকের ক্যানসারের প্রতিরোধ হিসেবেও কাজ করে। 
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো

পালংশাকে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন যা ভিটামিন এ’য়ের সাথে সম্পর্কিত। দুই পুষ্টি উপাদানই চোখকে সূর্যের হাত থেকে রক্ষা করে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমায়। চোখের শুষ্কতা দূর করতে, চোখের আলসার সারাতে দারুণ কাজ করে পালংশাক। চোখের ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। ফলে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে চোখের রোগ যেমন- ‘ম্যাককুলার ডিজেনারেইশন’ এবং ছানিসহ নানান সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।

পালংশাক হল মস্তিষ্কের খাবার
মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য পালংশাক সেরা খাবার। নিউরোলজি জার্নাল’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পালংশাকের মতো সবুজ শাক প্রতিদিন খাওয়ার ফলে বয়সের কারণে হওয়া জ্ঞানীয় দক্ষতার হ্রাস অনেকটাই কমে যায়। এতে উচ্চমাত্রায় লুটেইন, বিটা ক্যারোটিন, ফোলেইট ও ফিলোকুইনয়ন (ভিটামিন কে’ একটি ধরন) থাকার ফলে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।

রক্তের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে লৌহ যোগায়
পালংশাক লৌহের ভালো উৎস। লৌহ এমন একটি খনিজ যা রক্তের লোহিত কণিকার মূল উপাদান হিমোগ্লোবিন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এই কোষগুলো সারা দেহ ও কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে। তাই এগুলো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।দুই ধরনের লৌহ রয়েছে- একটি হল ‘হিম’ যা প্রাণীজ খাবারে পাওয়া যায় এবং অন্যটি হল ‘নন-হিম’ যা উদ্ভিজ্জ খাবার যেমন পালংশাকে পাওয়া যায়।
শরীর হিম এবং নন-হিম কোনো ধরনের লৌহ সরাসরি শোষণ করতে পারে না। তবে ভিটামিন সি যোগ করার মাধ্যমে এই শোষণ বাড়ানো যায়, একই প্রতিবেদনে জানান নিবন্ধিত মার্কিন পুষ্টিবিদ রায়ান গেইগার। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লেবুর রস, ব্রকলি, ক্যাপ্সিকাম, সাদা আলু ও টমেটো ইত্যাদির সাথে পালংশাক যুক্ত করে লৌহের শোষণ বাড়ানো যেতে পারে।

হাড়ের গঠন 
পালংশাক-এ ভালো পরিমাণে ভিটামিন কে থাকে। মজবুত হাড়ের গঠনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন কে। যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন কে আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকলে তা ক্যালসিয়াম সংগ্রহে সাহায্য করে ও মূত্রের মাধ্যমে ক্যালসিয়ামের অতিরিক্ত বেরিয়ে যাওয়া আটকায়।

সুস্থ চুল
চুল পড়ার অন্যতম কারণ হল লৌহের স্বল্পতা। পালংশাককে খনিজের শক্তির উৎস বলা যায়। এতে আছে ভিটামিন এ এবং ফলেট যা চুলের ফলিকল মসৃণ করতে এবং তেল নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করে। আরও আছে ভিটামিন সি যা চুলে আনে উজ্জ্বলভাব আর চুল রাখে সুস্থ।

ওজন নিয়ন্ত্রণ
এই শাকে চর্বি ও কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে। এতে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন ও খনিজ থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিপাক বাড়িয়ে হজমে সাহায্য করে। এতে ক্যালরির পরিমাণ কম এবং প্রোটিন, আঁশ বেশি যা ওজন কমাতে কার্যকর।

ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করে
পালংশাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ। এটি মানুষের ত্বক ও শ্লেষ্মা ঝিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া ভিটামিন এ সিবাম উৎপন্ন করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিবাম চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

ব্রণ দূর করে
ব্রণ সমস্যা দূর করা যায় পালংশাক দিয়ে। খাবার তালিকায় পালং রাখার পাশাপাশি তা মুখের মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করলেও ত্বকের এই ধরনের সমস্যা দূর হয়। এর প্রদাহরোধী উপাদান ত্বক পরিষ্কার করতে খুব ভালো কাজ করে।

সতর্কতা 
পালংশাকে প্রচুর অক্সালেট থাকে। কিডনির পাথরে অক্সালেট পাওয়া গেছে এমন কেউ বেশি পরিমাণে পালংশাক খাবেন না। এতে অক্সালিক অ্যাসিডের পরিমাণও বেশি। বেশি অক্সালিক অ্যাসিড ক্যালসিয়ামের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান শুষে নেয়। হালকা রান্না করলে এই অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায় বলে ধারণা করা হয়।


আরও পড়ুন: