ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
২৯ অক্টোবর ২০২৪

ঐতিহাসিক ‘ঢাকা গেইট’ উদ্বোধন আজ বিকালে


ডেস্ক রিপোর্ট
191

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ | ১০:০১:৫৮ এএম
ঐতিহাসিক ‘ঢাকা গেইট’ উদ্বোধন আজ বিকালে ফাইল-ফটো



অবশেষে স্বরূপে ফিরেছে ঢাকা গেইট। বহু বছর অযত্ন ও অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছিল ঐতিহাসিক ঢাকা গেইট। সংস্কারের পর স্বরূপে ফিরেছে এই ঐতিহাসিক স্থাপনা।

জনসাধারণের জন্য এ স্থাপনাটি আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তরফে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, পুরনো আদলে নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে ফটকটি। এর আশেপাশে দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা করা হয়েছে।
তবে মীর জুমলার আসাম অভিযানের ‘বিবি মরিয়ম’ কামানটি ওসমানী উদ্যান থেকে এনে ঢাকা গেইটের পাশে স্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা মো. আবু নাছের গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুধবার বিকাল ৪টায় ফটকটি উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন ও ফটকের নতুন নকশাকার অধ্যাপক আবু সাঈদ উপস্থিত থাকবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরের কাছে এর অবস্থান। কালের স্রোতে হারিয়ে যেতে বসেছিল ‘ঢাকা গেইট’। নান্দনিকতা ফেরাতে ২০২২ সালে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। প্রায় ৮২ লাখ টাকা খরচ করে এ গেইট সংস্কারের কাজ করেছে ঠিকাদার কোম্পানি আহনাফ ট্রেডিংস।

ঐতিহাসিক ঢাকা গেইট তিনটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিমাংশ পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ভবনের পাশ, পূর্বের অংশ পড়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তিন নেতার সমাধির প্রবেশপথের সামনে এবং মাঝের অংশ পড়েছে দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসিগামী সড়ক দ্বীপে। 

ঢাকা কোষে বলা হয়েছে, ঢাকার সীমানা চিহ্নিত করতে এবং স্থলপথে শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ১৬৬০ থেকে ১৬৬৩ সালের মধ্যে ফটকটি নির্মাণ করেছিলেন মীর জুমলা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শাহনেওয়াজ মনে করেন, এটি মুঘল আমলেই তৈরি।

তিনি বলেছেন, “ঔপনিবেশিক আমলে ঢাকার সীমানা আরও বড় ছিল। তখনই সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, নবাবদের আমলে হয়েছে শাহবাগ। ঔপনিবেশিক আমলে হলে এ গেইট আরও উত্তরে হত।

“তখন যদি এটা নির্মাণ করা হয়ে থাকে, তাহলে দেখা যাবে পেছনেও শহর এবং সামনেও শহর। মাঝখানে তো গেইট হওয়ার কথা নয়। গেইট তো হবে শহরের প্রবেশ পথ। কলোনিয়াল পিরিয়ডে গেইট দিয়ে আলাদা করার প্রবণতা দেখা যায় না। এই গেইট করার প্রবণতা মুঘল আমলেই ছিল।”

অধ্যাপক আবু সাঈদ বলেন, “জনশ্রুতি আছে, মীর জুমলা ঢাকা উত্তরের গেইট নির্ধারণের জন্য এটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু এখন যে গেইটটা আছে, সেটা ব্রিটিশ আমলে চার্লস ড’স তৈরি করেন।

“পূর্বদিকের যে অংশটা, সেটা পাকিস্তান আমলে আজম খানের সময়ে তৈরি করা হয়েছে। রাস্তাটা যখন বড় করে, তখন ফটকটির ৫০ শতাংশ সরিয়ে ফেলা হয়।”
তবে এটি মুঘল আমলেই নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। উপমহাদেশের খ্যাতনামা ঐতিহাসিক ও এমিরেটস অধ্যাপক ড. এ এইচ দানীর ভাষ্য, এর গড়ন ইউরোপীয় ধাঁচের।

কখন এবং কেন রমনার এই ফটকটি নির্মাণ হয়েছিল তা নিয়ে অবশ্য ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে।


আরও পড়ুন: