ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
২৯ অক্টোবর ২০২৪

ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে লোডশেডিং


ডেস্ক রিপোর্ট
176

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৪ | ১০:০৩:২৭ এএম
ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে লোডশেডিং ফাইল-ফটো



রমজানের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিং বেড়েছে। বাড়তি চাহিদার সঙ্গে সমন্বয় করে উৎপাদন করতে না পারায় উৎপাদন ঘাটতি হচ্ছে বিদ্যুতের। এতে বিতরণ কম্পানিগুলোকে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। রাজধানীতে লোডশেডিং না হলেও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিভাগের গ্রামাঞ্চলে বেড়েছে লোডশেডিং। 


কর্তৃপক্ষ দাবি করে বলেছে, সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যুতের একটি সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ বিচ্যুতির কারণে লোডশেডিং করতে হয়েছে।তবে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। গরম যত বাড়ছে, লোডশেডিংও তত বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি সংকটের কারণে চাহিদার পুরোটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মিত কাজের জন্য একটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল বন্ধ রয়েছে।এ ছাড়া এখন চলছে সেচ মৌসুম। এ কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। রমজানে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় ইফতার ও তারাবির সময় তাই তেলভিত্তিক কেন্দ্র চালানো হচ্ছে।
এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় গ্যাস সরবরাহে কিছুটা সংকট রয়েছে। আবার রমজান মাস ও সেচ মৌসুম শুরু হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক রাখতে জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। এর পরও কিছুটা ঘাটতি থাকছে।বন্ধ টার্মিনালটি চলতি মার্চের শেষ দিকে চালু হতে পারে বলে জানান তাঁরা। 


বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। পিজিসিবির তথ্য মতে, গতকাল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ৭৫৭ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট এবং উৎপাদন হয় ১১ হাজার ৬০৭ মেগাওয়াট।গতকাল ৫৬৪ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১২ হাজার ১০০ মেগাওয়াট, কিন্তু ১১ হাজার ৫৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়।

দেশের ৮০ শতাংশের বেশি গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় বিতরণ কম্পানি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এই প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ এলাকায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। বিতরণ কম্পানিটি গতকাল এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করেছে। এ সময় সারা দেশে তাদের চাহিদা ছিল ছয় হাজার ৯৬৩ মেগাওয়াট, সরবরাহ হয়েছে পাঁচ হাজার ৯২৯ মেগাওয়াট। গতকাল আরইবির বিতরণ এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয়েছে ঢাকা জোনে।এদিকে আরইবি সূত্র বলছে, চাহিদার চেয়ে কম সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে আরইবি’র আওতাধীন এলাকায়। ময়মনসিংহ এলাকায় বেশি এটি।এই এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা এখন ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমানে এই পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রেশনিং করে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।  পাওয়ার সেলের তথ্য মতে, বর্তমানে উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৯ হাজার ৭২৭ মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ৬৪ লাখ। বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী শতভাগ।আর এদিকে সবচেয়ে কম লোডশেডিং বরিশাল জোনে। 

বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজধানী ঢাকা প্রাধান্যের শীর্ষে থাকে সবসময়। তাই ঢাকার বাইরে লোডশেডিং বেশি হয়। পিডিবি সূত্র জানায়, এবার রমজানে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুতের এ চাহিদা থাকবে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকায় সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৩ হাজার মেগাওয়াট। ওই সময়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয় ১৪ হাজার ২০৬ মেগাওয়াট। সর্বনিম্ন উৎপাদন ধরা হয় ৯ হাজার ৮২১ মেগাওয়াট। রিজার্ভ (উৎপাদন শেষে) ১ হাজার ২০৬ মেগাওয়াট। ময়মনসিংহ এলাকায় আগের দিন ৮৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে ১৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং করতে হয়েছে বলে পিডিবি’র তথ্য উল্লেখ রয়েছে।গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ধরা হয়েছে ন্যূনতম ১৫৪ কোটি ঘনফুট। কিন্তু এখন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৮৮২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।


আরও পড়ুন: