ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
২৯ অক্টোবর ২০২৪

বন্ধ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ৩১ হাজার কর্মীর স্বপ্নভঙ্গ


ডেস্ক রিপোর্ট
173

প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৪ | ১০:০৬:৪৪ এএম
বন্ধ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ৩১ হাজার কর্মীর স্বপ্নভঙ্গ ফাইল-ফটো



বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া কর্মী নেওয়া বন্ধ করেছে। আপাতত সব সোর্স কান্ট্রি থেকেই কর্মী নেওয়া স্থগিত করেছে দেশটি। ফলে গতকাল রাত ১২টার পর থেকে বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের জন্য বন্ধ হয়েছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। গতকাল শেষ মুহূর্তে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য উপচে পড়া ভিড় ছিল ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে। কিন্তু ভিসা পেয়ে, কয়েক লাখ টাকা খরচ  করেও মালয়েশিয়া যেতে পারেনি প্রায় ৩১ হাজার বাংলাদেশি।শেষ মুহূর্তে বেশ কয়েকটি বিশেষ ফ্লাইট আয়োজন করেও এই  বিশালসংখ্যক ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীকে পাঠানো যায়নি। ঋণ করে টাকা দিয়ে নিঃস্ব এসব কর্মী হাহাকার করেছে বিমানবন্দরে।

গত দেড় বছরে প্রায় ৫ লাখ কর্মী যাওয়া মালয়েশিয়ার রাস্তা বন্ধ হওয়ায় বড় ধাক্কা খেল বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার। বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, দীর্ঘ চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০২২ সালে নানা প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু করা হয়। এরপর মালয়েশিয়া থেকে পাওয়া চাহিদাপত্রের বিপরীতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ৫ লাখ ২৪ হাজার ৯৪৬ কর্মীকে মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমোদন দেয়। গত মার্চে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত আর শ্রমিক নেওয়া হবে না। আর অনুমোদন ও ভিসা পাওয়াদের ৩১ মে’র মধ্যে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে হবে। সর্বশেষ মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা থেকে গতকাল (৩১ মে) রাত ১২টার আগে পর্যন্ত ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটের যাত্রীদেরই কর্মী হিসেবে গ্রহণ করা হবে। রাত ১২টার পর ছেড়ে যাওয়া আর কোনো ফ্লাইটকে অনুমোদন দেওয়া হবে না। রাত ১২টা পর্যন্ত মালয়েশিয়া যেতে পেরেছে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ১০২ জন। সে হিসেবে মালয়েশিয়া যেতে পারেনি ৩০ হাজার ৮৪৪ জন ভিসা ও অনুমোদন পাওয়া বাংলাদেশি কর্মী।

কুয়ালালামপুরের দুটি আন্তর্জাতিক বিমান টার্মিনালের ফ্লোরে গতকাল পর্যন্ত ১৪টি দেশ থেকে আসা প্রায় ২০ হাজার কর্মী অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী বাংলাদেশের।শেষ মুহূর্তে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে কর্মীর উপচে পড়া ভিড় তৈরি হয়েছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে কর্মী ও নিয়োগকর্তাদের। নিজেদের কর্মী শনাক্তে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নিয়োগকর্তাদের।কর্মীরা বলছেন, তাঁরা তিন-চার দিন ধরে বিমানবন্দরে অবস্থান করছেন। কেউ নিয়োগকর্তার খোঁজ পাচ্ছেন, আবার কেউ পাচ্ছেন না।

নিয়োগকর্তারা তাঁদের শুধু অপেক্ষা করতে বলছেন। অনেকে বলছেন, নিয়োগকর্তা তাঁদের না নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।কর্মীদের এসব অভিযোগ নিয়ে নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘আমরা কর্মীদের ফিরে যাওয়ার কথা বলিনি। তবে অতিরিক্ত চাপ পড়ায় তাঁদের খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সময় প্রয়োজন।’

প্রবাসী কর্মীদের এই বিশাল চাপ সামলাতে দেশটির অভিবাসন বিভাগ থেকে নিয়োগকর্তাদের জন্য কর্মী খোঁজার সময়সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে।অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত কাউন্টার খোলা হয়েছে এবং অভিবাসন কর্মকর্তার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। বিদেশি কর্মীদের জন্য পানি ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: