ঢাকা মঙ্গলবার
১৬ এপ্রিল ২০২৪
০৩ এপ্রিল ২০২৪

অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বিশ্ব ব্রেইল দিবস আজ


ডেস্ক রিপোর্ট
163

প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারী ২০২৩ | ১২:০১:১১ পিএম
অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বিশ্ব ব্রেইল দিবস আজ ফাইল-ফটো



অতীতের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে স্মরণ করা বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতেই এই সব দিবস পালিত হয়। পালনীয় সেই সব দিবসগুলোর মধ্যে একটি হলো বিশ্ব ব্রেইল দিবস।  বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিশ্ব ব্রেইল দিবস। দিবসটি অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের  কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তারা এই শিক্ষা গ্রহণ করছে যে পদ্ধতিতে সেটাকে আমরা ব্রেইল পদ্ধতি বলি।

ব্রেইল পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। তারাও প্রমাণ করতে পারছে তাদের মেধা এবং দক্ষতা। তাই ৪ জানুয়ারি আজ প্রতিটি দেশে বিশ্ব ব্রেইল দিবস পালিত হচ্ছে। এই ব্রেইল পদ্ধতি আবিষ্কার করেন লুইস ব্রেইল। ১৮০৯ সালের ৪ জানুয়ারি প্যারিসের কাছে কুপভেরি নামক একটি ছোট শহরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার এই মহান সুদূরপ্রসারী আবিষ্কারের ফলে তাকে সম্মান জানানোর জন্য তার জন্মদিনে ব্রেইল দিবস পালিত হয়।

ব্রেইল পদ্ধতিতে ছয়টি ডট দিয়ে অক্ষর, সংখ্যা, চিহ্ন ইত্যাদিকে সূচিত করা হয়। দৃষ্টিহীন ব্যক্তিরা এই উন্নীত বা উত্তর বিন্দুর ওপর আঙুল বুলিয়ে নকশা অনুযায়ী অক্ষরগুলো অনুধাবন করে। এই পদ্ধতি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য যে কতটা আশীর্বাদস্বরূপ সেটা আমরা সাধারণ মানুষ হয়তো উপলব্ধি করতে পারি না।

মানুষ তার নিজের জীবন থেকেই কোনো কিছুর গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি করে লুইস ব্রেইলের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তিন বছর বয়সে লুইস ব্রেইল অন্ধ হয়ে যান। দৃষ্টিহীনতার কারণে তার জীবন থেমে থাকেনি। পড়াশোনার জন্য তিনি ভর্তি হলেন প্যারিসের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি বিশেষ স্কুলে। একদিন তিনি জানতে পারলেন অ্যালফাবেট কোডের কথা।

ফরাসি সৈন্য বাহিনীর অফিসাররা সৈন্যদের সঙ্গে রাতে কথা বলার সময় শত্রুপক্ষের নিশানা থেকে বাঁচতে এই কোডে কথা বলতেন। এই অ্যালফাবেট কোড বেশ কিছু বিন্দু আর ছোট লাইনের সমষ্টি যেগুলো পাতার ওপর একটু উঁচু করে খোদাই করা হতো যাতে আঙুল স্পর্শ করলে সেগুলো পড়া যায়। ব্রেইলের কাছে এই পদ্ধতি অনেক ভালো লাগে এবং তার মাথায় অন্ধদের জন্য শিক্ষা দেওয়ার নতুন উপায় আসে।

২০ বছর বয়সে অন্যান্য অন্ধ ব্যক্তিকে তিনি শিক্ষা দিতে অগ্রসর হন। ১৮২৭ সালে তিনি প্রথম ব্রেইল পদ্ধতির বই প্রকাশ করেন। তবে তখনকার সময়ে এই পদ্ধতিতে অন্ধদের শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারটি খুব একটা প্রচলিত হয়নি। তবে বর্তমানে এই পদ্ধতি অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। অন্ধ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে। ব্রেইল পদ্ধতি ব্যবহারকারীরা রেফ্রেসবল ব্রেইল ডিসপ্লে ব্যবহার করার মাধ্যমে কম্পিউটারের পর্দা ও অন্যান্য সমর্থনযোগ্য ডিভাইস পড়তে পারে।

লুইস ব্রেইলের এই আবিষ্কার আজ পুরো পৃথিবীর কাছে স্মরণীয়। অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের কাছে নতুন এক দ্বারের উন্মোচন ঘটেছে। তারাও শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে অন্যদের মতো। বর্তমানে বিভিন্ন ভাষায় এই ব্রেইল পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়েছে। ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার আলোর সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা পৃথিবীটাকে দেখছে।


আরও পড়ুন: