ঢাকা শনিবার
২৭ এপ্রিল ২০২৪
২৭ মার্চ ২০২৪

নাজমুল শান্তর সেঞ্চুরিতে জয়ের শুরু বাংলাদেশের


ডেস্ক রিপোর্ট
65

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২৪ | ০১:০৩:৩৩ পিএম
নাজমুল শান্তর সেঞ্চুরিতে জয়ের শুরু বাংলাদেশের ফাইল-ফটো



চট্টগ্রামের রোমাঞ্চকর বুধবারের রাতের সেরা দৃশ্যপট কোনটা? বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ২৫৫ রানের আটকে দেওয়া নাকি সেঞ্চুরি হাঁকানো নাজমুল হোসেনের সঙ্গে অর্ধশতক করা মুশফিকুর রহিমের অবিচ্ছেদ্য ১৬৫ রানের জুটি! যেটাকেই বেছে নেন না কেন, জয়ের কৃতিত্বে কোনো অংশে কোনটা পিছিয়ে থাকার কথা নয়। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে গতকাল শুরুর ছন্দটা বুনে দেন বোলাররা, সেই ধারাবাহিকতায় বাকি কাজটুকু সারেন ব্যাটাররা। আরো নির্দিষ্ট করে বললে নাজমুল ও মুশফিক। দুই বিভাগের দায়িত্বশীলতায় প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেটের বড় জয় বাংলাদেশের।

 

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভারে তোলে ২৫৫ রান। বাংলাদেশ জিতে যায় ৩২ বল বাকি রেখেই।

 

বোলারদের বেধে দেওয়া ছন্দে সুর মেলাতে পারেননি চার নম্বর থেকে আবার ওপেনিংয়ে উঠে আসা লিটন দাস। বাঁহাতি পেসার দিলশান মাদুসঙ্কার অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে ইনসাইড এজ হয়ে লেগ স্ট্যাম্প উপড়ে যায় ডানহাতি ব্যাটারের। গোল্ডেন ডাকে ফেরেন তিনি। ক্যারিয়ারে এটি ষষ্ঠ বার গোল্ডেন ডাক তার।

 

ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে গোল্ডেন ডাকে লিটনের ওপর আছেন শুধু হাবিবুল বাশার (৭ বার)। সুবিধা করতে পারেনি সৌম্য সরকার (৩) ও তাওহীদ হৃদয় (৩)। ২৩ রানে বাংলাদেশের ৩ উইকেট হারানো দেখে হাতে গোনা যে কজন সমর্থক খেলা দেখতে এসেছিলেন, তাদের অনেকে বাড়ির পথ ধরেন।

 

প্রথম বলে উইকেট হারানোর পর ক্রিজে গিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন শান্ত। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। ১২৯ বলের ইনিংসে ১৩ চারের সঙ্গে দুটি ছয় মারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৮৪ বলে ৭৩ রান করে।

দুজনের ম্যাচ জেতানো অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ১৭৫ বলে ১৬৫ রান। পঞ্চম উইকেট যা দেশের মাঠে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি এটি।

 

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলংকা ভালো শুরু করে ৮৪ রানে তিন উইকেট হারায় ১৪ ওভারের মধ্যে। তিনটি উইকেট নেন তরুণ ডান-হাতি পেসার তানজিম হাসান। অভিষ্কা ফার্নান্ডোকে (৩৩) দিয়ে শুরু। বাংলাদেশের জন্য সেটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। কেননা অভিষ্কা বিধ্বংসী হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন। পাথুম নিশাঙ্কা (৩৬) তানজিমের শর্ট বলের শিকার হন। তৃতীয় স্লিপের কাছাকাছি ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার। সাদিরা সামারাবিক্রমাকে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের অসাধারণ ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন তানজিম। ১৪তম ওভারের শুরুতে শ্রীলংকা ৮৪ রানে তিন উইকেট হারায়।

চতুর্থ উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও চারিত আসালাঙ্কা (১৮)। বাঁ-হাতি আসালাঙ্কাকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। মেন্ডিসের আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে পঞ্চম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। তাসকিনের বলে মিড-অফে সহজ ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন। ৬৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা মেন্ডিস ৭৫ বলে ৫৯ রান করেন পাঁচটি চার ও একটি ছয়ের সহায়তায়। পঞ্চম উইকেটে জানিথ লিয়ানাগের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস।

 

১০ ওভারেরও কম বাকি থাকতে শ্রীলংকা ষষ্ঠ উইকেট হারায়। এবার তাসকিনের শিকার হন হাসারাঙ্গা। থার্ড ম্যানে তাওহীদ হৃদয় ক্যাচ নেন। হাসারাঙ্গার অবদান ১৪ বলে ১৩। এর আগে সফরকারীদের ইনিংসে দ্বিতীয় ফিফটি (৫০ বলে) পূর্ণ করেন জানিথ লিয়ানাগে। এটি তার টানা তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৬৯ বলে ৬৭ রান (তিনটি চার ও দুটি ছয়) করে সাজঘরে ফেরেন লিয়ানাগে। শরীফুলের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন লংকান ব্যাটার। সাত বল বাকি থাকতে শ্রীলংকা অলআউট হয় ২৫৫ রানে। তানজিমের মতো তাসকিন এবং শরীফুলও তিন উইকেট নেন। এই ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয় মোস্তাফিজুর রহমানকে।

 

*সংক্ষিপ্ত স্কোর:*

*শ্রীলঙ্কা:* ৪৮.৫ ওভারে ২৫৫ (নিশাঙ্কা ৩৬, আভিশকা ৩৩, কুশাল মেন্ডিস ৫৯, সাদিরা সামারাবিক্রমা ৩, আসালাঙ্কা ১৮, লিয়ানাগে ৬৭, হাসারাঙ্গা ১৩, থিকশানা ১, মাদুশান ৮, কুমারা ৫*, মাদুশাঙ্কা ০; শরিফুল ৯.৫-১-৫১-৩, তাসকিন ১০-১-৬০-৩, ৮.৪-০-৪৪-৩, তাইজুল ৮-০-৫৪-০, মিরাজ ১০-১-৩৩-১, সৌম্য ২.২-০-১১-০)

 

*বাংলাদেশ:* ৪৪.৪ ওভারে ২৫৭/৪ (লিটন ০, সৌম্য ৩, শান্ত ১২২*, হৃদয় ৩, মাহমুদউল্লাহ ৩৭, মুশফিক ৭৩*; মাদুশাঙ্কা ৮-১-৪৪-২, মাদুশান ৮-০-৫৩-১, কুমারা ৬-০-৩৫-১, থিকশানা ৯.৪-০-৪৭-০, হাসারাঙ্গা ৮-০-৫৪-০, লিয়ানাগে ৫-০-২২-০)

 

*ফল:* বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী

 

*সিরিজ:* ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ১-০তে এগিয়ে

 

*ম্যান অব দা ম্যাচ:* নাজমুল হোসেন শান্ত


আরও পড়ুন: