ঢাকা শনিবার
২৭ এপ্রিল ২০২৪
২৭ মার্চ ২০২৪

তানজিদ তামিম-রিশাদের ব্যাটে সিরিজ জয় বাংলাদেশের


ডেস্ক রিপোর্ট
65

প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৪ | ১২:০৩:৩৯ পিএম
তানজিদ তামিম-রিশাদের ব্যাটে সিরিজ জয় বাংলাদেশের ফাইল-ফটো



সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে লঙ্কানদের ৪ উইকেটে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিলো স্বাগতিকরা
লঙ্কানদের টার্গেট ২৩৬ রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে তানজিদ হাসান তামিম ও রিশাদ হোসেন ব্যাটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে পারেননি সৌম্য সরকার। ঘাড়ে চোট পাওয়া এই ওপেনারের কনকাশন বদলি হিসেবে ইনিংস শুরু করেন তানজিদ হাসান। একাদশের বাইরে থেকে এসে বাজিমাত করেছেন এই তরুণ।
তাঁর ৮১ বলে ৮৪ রানের অনবদ্য ইনিংসের সঙ্গে শেষদিকে রিশাদ হোসেনের টর্নেডো ইনিংসে ৪ উইকেটে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই ম্যাচ জেতায় ২-১ ব্যবধানে জিতে সিরিজ জিতে নিয়েছে স্বাগতিকরা। ৫৮ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে রিশাদ ১৮ বলে ৪৮ ও মুশফিকুর রহিম ৩৬ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তানজিমের সঙ্গী হওয়া এনামুল হক বিজয় প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ, ২২ বলে খেলে করেন ১২।
বিজয়ের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। টাইগার অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং চালিয়ে যান তানজিদ তামিম। তবে দলীয় ৫৬ রানে ৫ বলে মাত্র ১ রান করে আউট হন শান্ত। এরপর ক্রিজে আসা তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন তামিম। ৫১ বলে ফিফটি তুলে নেন এই টাইগার ওপেনার।
হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ৪৯ রানের জুটি গড়েন তামিম। এরপর দ্রুতই জোড়া উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। হৃদয় ৩৬ বলে ২২ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪ বলে মাত্র ১ করে সাজঘরে ফিরে যান। তাদের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তামিম। 

তবে দলীয় ১৩০ রানে ৮১ বলে ৮৪ রান করে ফিরে যান তামিম। তার বিদায়ে আরও চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন মুশফিক। ৪৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার।

হাসারাঙ্গাকে ছক্কার চেষ্টায় মিরাজ যখন আউট হন ২৫ রানে, বাংলাদেশ তখন পড়ে যায় অনিশ্চয়তায়। উইকেট বাকি ছিল ৪টি, রান প্রয়োজন তখনও ৫৮। কিন্তু রিশাদের ব্যাটে উড়ে যায় সব অনিশ্চয়তা।

প্রথম বলে ছক্কা দিয়ে শুরু করেন রিশাদ। হাসারাঙ্গার ওই ওভারে মারেন আরও একটি করে চার ও ছক্কা। লঙ্কান লেগ স্পিন তারকার পরের ওভারে তাণ্ডব বইয়ে দেন তিনি। তিন চার ও দুই ছক্কায় ওভার থেকে নেন ২৪ রান। পরের ওভারে মুশফিকের ব্যাটরে কানায় লেগে বাউন্ডারিতে জিতে যায় দল।

অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ২৫ বলে ৫৯ রান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা শুরুতেই বিপদে পড়ে যায়। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই পাথুম নিসাঙ্কাকে এলবিডব্লিউ করেন তাসকিন আহমেদ। রিপ্লেতে যদিও দেখা যায়, বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে। তবে রিভিউ নেননি নিসাঙ্কা।

তাসকিন পরের ওভারে দারুণ এক আউট সুইঙ্গারে বিদায় করেন আভিশকা ফার্নান্দোকে। সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই শ্রীলঙ্কা হারায় সাদিরা সামারাউইক্রামাকে। একাদশে ফিরে প্রথম ওভারে উইকেট পান মুস্তাফিজুর রহমান।

এরপর লড়াইয়ের চেষ্টা করেন কুসাল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কা। কিন্তু খুব দীর্ঘায়িত হয়নি তা। রিশাদ হোসেন আক্রমণে এসেই ফেরান ২৯ রান করা মেন্ডিসকে। তৃতীয় ম্যাচে এসে প্রথম উইকেটের স্বাদ পেলেন এই লেগ স্পিনার। আসালাঙ্কার ইনিংস ৩৭ রানে থামান মুস্তাফিজ।

১৬ বল খেলে প্রথম রানের দেখা পাওয়া দুনিথ ওয়েলালাগে থামেন ওই এক রানেই। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাও পারেননি টিকতে। দুজনকেই ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ।

এই সময়টায় এক প্রান্ত আগলে ছিলেন লিয়ানাগে। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন মাহিস থিকশানা। ১৫৪ রানে ৭ উইকেট হারানো দলকে উদ্ধার করে দুজনের ৬০ রানের জুটি। ইনিংসের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি যা।

মুস্তাফিজ পায়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়ার পর ওই ওভার করতে এসে সৌম্য ভাঙেন এই জুটি। 

এরপর লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে শতরান পূরণ করেন লিয়ানাগে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে আগের ৫ ইনিংসে একবার ৯৫ রানে থমকে যান তিনি, ফিফটি করেন আরও দুটিতে। এবার স্বাদ পেলেন প্রথম সেঞ্চুরির।

১১ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন ২৮ বছর বয়সী ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কা স্পর্শ করে ২৩৫।


সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

শ্রীলঙ্কাঃ ৫০ ওভারে ২৩৫ (নিসাঙ্কা ১, আভিশকা ৪, মেন্ডিস ২৯, সামারাউইক্রামা ১৪, আসালাঙ্কা ৩৭, লিয়ানাগে ১০১*, ওয়েলালাগে ১, হাসারাঙ্গা ১১, থিকশানা ১৫, মাদুশান ৩, কুমারা ১; শরিফুল ১০-০-৫৫-০, তাসকিন ১০-১-৪২-৩, মুস্তাফিজ ৯-১-৩৯-২, সৌম্য ২-০-১০-১, মিরাজ ১০-১-৩৮-২, রিশাদ ৯-০-৫১-১)

বাংলাদেশঃ ৪০.২ ওভারে ২৩৭/৬ (এনামুল ১২, তানজিদ , শান্ত ১, হৃদয় ২২, মাহমুদউল্লাহ ১, মুশফিক ৩৭*, মিরাজ ২৫, রিশাদ ৪৮*; থিকশানা ৯.২-১-৩৫-০, মাদুশান ৭-০-৫২-০, কুমারা ৮-০-৪৮-৪, হাসারাঙ্গা ৯-০-৬৪-২, ওয়েলালাগে ৬-০-৩০-০, আসালাঙ্কা ১-০-৮-০)।

ফলাফলঃ বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচঃ রিশাদ হোসেন।


আরও পড়ুন: