ঢাকা মঙ্গলবার
০৫ নভেম্বর ২০২৪
৩০ অক্টোবর ২০২৪

কার ভাগ্যে হোয়াইট হাউস, ট্রাম্প না কমলা


ডেস্ক রিপোর্ট
5

প্রকাশিত: ০৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০:১১:০৯ এএম
কার ভাগ্যে হোয়াইট হাউস, ট্রাম্প না কমলা ফাইল-ফটো



জাতীয়ভাবে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার দৌড়ে পরস্পরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছেন কমলা ও ট্রাম্প। আগামী মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নির্বাচনের দিন হলেও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আগাম ভোট গ্রহণ আগেই শুরু হয়েছে এবং শনিবার রাত ৯টা নাগাদ প্রায় ৮ কোটি ভোট (সশরীরে কেন্দ্রে এবং ডাকযোগে) জমা পড়েছে বলে জানা গেছে। আর এভাবেই এবারের নির্বাচনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা দৃশ্যমান হচ্ছে। কারণ, এ নির্বাচনের ফলাফলের ওপর মার্কিন গণতন্ত্রের গতি-প্রকৃতি নির্ধারিত হবে।

কমলা এবং ট্রাম্প উভয়েই নিজের বিজয় নিশ্চিতের জন্য সভা-সমাবেশ করছেন। পাশাপাশি আগের মতো বিভিন্ন সংস্থার জরিপেও উঠে আসছে জয়-পরাজয়ের নানা আভাস। যদিও গত কয়েকটি নির্বাচনে জরিপের ফলাফল শতভাগ দৃশ্যমান হয়নি, তবুও প্রার্থীগণকে তৎপরতায় উজ্জীবিত রাখতে জরিপগুলো অপরিসীম ভূমিকা রাখে। সর্বশেষ জরিপে রিপাবলিকান স্টেট আইওয়াতে ট্রাম্পের চেয়ে কমলা এগিয়ে গেছেন। আইওয়ায় ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পরিচালিত ডে মইন রেজিস্টার ও মিডিয়াকমের জরিপে ৮০৮ জন সম্ভাব্য ভোটার অংশ নেন। তাদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ হ্যারিসের পক্ষে ও ৪৪ শতাংশ ভোটার ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন জানান।

এই জরিপে সম্ভাব্য গ্রহণযোগ্য ভুলের মাত্রা ধরা হয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এর আগে সেপ্টেম্বরে আইওয়ায় পরিচালিত আরেকটি জরিপে ট্রাম্প ৪ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন বলে ডে মইন রেজিস্টার সংবাদপত্র জানিয়েছে। এ স্টেটে যে প্রার্থীই জয়ী হবেন অঙ্গরাজ্যের ছয়টি ইলেকটোরাল ভোট তার পক্ষে যাবে।হোয়াইট হাউসে যেতে হলে একজন প্রার্থীকে অন্তত ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে। বাংলাদেশের সিলেট সদরের মতো আইওয়া হচ্ছে এমন একটি স্টেট, যেখানে বিজয়ী প্রার্থীই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হয়ে আসছেন।  

নির্বাচনের আগে শেষ মুহূর্তের প্রচারে উভয় দল দোদুল্যমান হিসেবে পরিচিত স্টেটগুলোতে বেশি জোর দিচ্ছেন। এবারের নির্বাচনে পেনসিলভেনিয়া, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, মিশিগান, উইসকনসিন, অ্যারিজোনা ও নেভাদা- এ সাতটি স্টেট দোদুল্যমান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত মুসলিম আমেরিকান ভোটারের বড় একটি অংশের সমর্থন কমলা নিজের পক্ষে আনতে সক্ষম হননি। আগের প্রায় সবকটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা মুসলিম আমেরিকার সিংহভাগ ভোট পেয়েছেন। বাইডেন-কমলার গাজা ও লেবানন নীতিতে বিরাগভাজন হয়েছেন মুসলিম আমেরিকানরা। ফলে জাতীয়ভাবে জরিপে এগিয়ে থাকা কমলার পক্ষে দোদুল্যমান ৭ স্টেটের ইলেকটোরাল ভোট বাগিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে উঠেছে বলে নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা মন্তব্য করেছেন। তবে উচ্চ শিক্ষিত এবং স্বনির্ভর বয়স্ক শ্বেতাঙ্গ নারীর বড় একটি অংশ শেষ মুহূর্তে কমলার প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন-একে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকেরা।  

এই ৭ স্টেটের ওপর পরিচালিত সর্বশেষ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী (শনিবার) নেভাদা, জর্জিয়া, মিশিগান এবং উইসকনসিনে কমলা হ্যারিস এবং অ্যারিজোনা ও নর্থ ক্যারোলিনায় ট্রাম্প এগিয়ে আছেন। পেনসিলভেনিয়া স্টেটে উভয় প্রার্থী সমানে সমান।  

এবারের নির্বাচনে মার্কিন মুল্লুকে অনেক আলোচিত-সমালোচিত ট্রাম্পের পরবর্তী জীবনের ভাগ্যও নির্ধারিত হবে। ট্রাম্পের ভাগ্য প্রেসিডেন্ট পদ ও কারাবাসের ঝুঁকির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। জিতলে তিনি প্রেসিডেন্ট হবেন, আর হেরে গেলে তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে। উল্লেখ্য, ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র কোডের অ্যাক্সেস পাওয়া প্রথম দোষী সাব্যস্ত অপরাধী। তার হোটেল ও ক্যাসিনো ব্যবসা নিয়ে নানা অভিযোগ আছে, তার বিরুদ্ধে আছে কর জালিয়াতির অভিযোগও। তাই যদি তিনি বিজয় থেকে ছিটকে পড়েন, তাহলে ৭৮ বছরের ট্রাম্পকে আরও অপমানজনকভাবে আদালতের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এমনকি কারাগারেও যেতে হতে পারে। এটি হবে তার মোহনীয় জীবনের সমাপ্তি, যে জীবনে তিনি সবসময় আইন ও জবাবদিহিতাকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বলা হচ্ছে, মঙ্গলবার দিনটি কার্যত ট্রাম্পের জন্য রায়ের দিন।  

বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনের সর্বশেষ বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আমেরিকার উদ্যমী উদ্যোক্তাদের ভোট যে প্রার্থী বেশি পাবেন, তার ভাগ্যেই জুটবে বিজয় মুকুট। এক্ষেত্রে ৪০ বছরের কম বয়সী যুব সমাজের মনোভাব উপস্থাপনকালে ম্যাগাজিনটি বলেছে, গত নির্বাচনে জো বাইডেন এই শ্রেণীর পুরুষ ভোটারের সমর্থন পেয়েছিলেন। এবার সে চেষ্টা করছেন কমলা হ্যারিস। কিন্তু বাইডেনের দুর্বল এবং সিদ্ধান্তহীন অনেক পদক্ষেপে স্বনির্ভরতায় বিশ্বাসী পুরুষ যুবকেরা কমলার প্রতি আস্থা রাখতে চাচ্ছেন না।


আরও পড়ুন: