ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আ. লীগকে পাশে না পেয়ে ১৪ দলের শরিকদের অনেক প্রশ্ন


Reporter01
271

প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৬:০২:৪৫ এএম
আ. লীগকে পাশে না পেয়ে ১৪ দলের শরিকদের অনেক প্রশ্ন



বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনের উপনির্বাচনে ১৪–দলীয় জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের ভূমিকা নিয়ে অন্য শরিকদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন এবং কিছুটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। জাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি—দুই শরিককে দুটি আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, জোটের প্রার্থী জেতাতে আওয়ামী লীগের চেষ্টা, উদ্যোগ কিংবা সক্রিয় তৎপরতা ছিল না। জাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টির যতটুকু শক্তি আছে, তার ওপর ভিত্তি করেই তাদের ভোট করতে হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও সরকারের মূল মনোযোগ ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির দলছুট নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে ঘিরে। শরিকদের স্ব স্ব শক্তি কতটা আছে, সেটা বোঝানোর জন্য আওয়ামী লীগ তাদের পরীক্ষায় ফেলেছিল কি না—এমন প্রশ্নেও নানা আলোচনা চলছে ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে। সার্বিকভাবে এই উপনির্বাচনকে নিজেদের জন্য ‘বার্তা’ হিসেবেই দেখছে আওয়ামী লীগের শরিকেরা। যে দুটি আসন শরিকদের ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ, তার একটিতে বগুড়া-৪ আসনে জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিমকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের সঙ্গে। সেখানে মাত্র ৮৩৪ ভোটে জয়ী হয়েছেন জাসদের প্রার্থী। আর ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ১৪ দল থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলী জামানতই হারিয়েছেন। এ ধরনের একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির দায় কার কিংবা কার ব্যর্থতা—এসব প্রশ্নই এখন আওয়ামী লীগের শরিকদের আলোচনায়। তবে শরিকদের প্রাথমিক মূল্যায়নে প্রধান শরিক আওয়ামী লীগের প্রতি কিছুটা ক্ষোভও প্রকাশ পেয়েছে। এ ছাড়া ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থী ছিল, তারা জয়ী হলেও সেই আসনগুলোতেও দলটির কৌশল নিয়ে শরিকেরা প্রশ্ন তুলেছে। তাদের মূল্যায়ন হচ্ছে, একমাত্র দলছুট প্রার্থী উকিল সাত্তারের আসনেই ক্ষমতাসীন দল সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল। আওয়ামী লীগ অবশ্য পরিস্থিতিটাকে ব্যাখ্যা করছে ভিন্নভাবে। দলটির নীতিনির্ধারণী একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি ভোটে অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের তিনজন প্রার্থী জিতবেন—এটা নিশ্চিতই ছিল। এ জন্য আওয়ামী লীগের সব চেষ্টা ছিল উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে নিয়ে। তবে শরিকদের স্ব স্ব শক্তি দেখানোর পরীক্ষায় ফেলা হয়েছিল কি না—শরিকেরা যে এমন প্রশ্ন তুলেছেন, আওয়ামী লীগের কৌশলেই এর জবাব পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ভোট বর্জন করলে হয়তো ১৪-দলীয় জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হবে। তবে জয়ী করে আনার চেষ্টা থাকবে না। আর বিএনপি নির্বাচনে এলে জোটের প্রার্থীর পক্ষে সবাই একযোগে নামবে। এ জন্য আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ১৪ দলের অন্যতম দুই শরিক দলের শক্তি দেখতে চেয়েছে। গত বুধবার অনুষ্ঠিত ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল আংশিক) আসনে ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী জামানত হারিয়েছেন। সেখানে বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গোপাল চন্দ্র রায়। ২০১৪ সালে জোটের প্রার্থী হিসেবে ইয়াসিন আলী এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি জোটের মনোনয়ন পেলেও বিএনপির প্রার্থীর কাছে হেরে যান।

আরও পড়ুন: