ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ নভেম্বর ২০২৪
১৭ মার্চ ২০২৪

কমলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ


ডেস্ক রিপোর্ট
285

প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর ২০২২ | ১০:১১:১৩ এএম
কমলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফাইল-ফটো



আরও কমবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। চলতি মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ দাঁড়াবে ৩৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারে। আর রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ (ইডিএফ) বিভিন্ন তহবিলে রিজার্ভ থেকে জোগান দেওয়া অর্থ বাদ দিলে ব্যবহারযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়াবে ২৬ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলারে।

সোমবার (৭ নভেম্বর) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে অবস্থান করছিল। এদিনও রিজার্ভ থেকে ১৩১ মিলিয়ন বা ১৩ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে।

আকু পরিশোধের এ অর্থ মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সমন্বয় করা হবে। এতে রিজার্ভ কমে ৩৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নামবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, রবিবার আকু পেমেন্ট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় সেটি করা যায়নি। তবে কিছু কাজ বাকি থাকায় মঙ্গলবার রিজার্ভ থেকে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার বা ১৩০ কোটি ডলার পরিশোধ করা হবে। আকু পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৩৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলারে চলে আসবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ে ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলারের আকু পরিশোধের কথা ছিল। তবে একই দিন রবিবার পড়েছিল, যেদিন ফেড এর সাপ্তাহিক বন্ধের দিন। তাই সোমবার পরিশোধের কথা ছিল। অনেক কাজ এগিয়েছে কিন্তু এখনও কিছু প্রসিডিউর বাকি। এ কারণে মঙ্গলবার সকালে রিজার্ভ থেকে আকুর পরিশোধিত অর্থ সমন্বয় করা হবে। এতে রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ৩৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলারে। এর আগে গত জুলাই-আগস্ট সময়ের ১ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন আকুর দায় পরিশোধ করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করা হয়।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালান্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন (বিপিএম৬) ম্যানুয়াল অনুযায়ী ‘কেবল ব্যবহারযোগ্য অংশকেই রিজার্ভ হিসেবে দেখাতে হবে। ’

আইএমএফ’র শর্ত অনুযায়ী, ইডিএফে জোগান দেওয়া ৬০০ কোটি ডলার, জিটিএফে দেওয়া ২০ কোটি, এলটিএফএফে তিন কোটি ৮৫ লাখ এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে দেওয়া ৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার রিজার্ভে দেখানো হচ্ছে। যেটি ব্যবহারযোগ্য নয়।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতে, মোট ৬২৮ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের বাইরে কারেন্সি সোয়াপের আওতায় শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি ডলার। আর ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রয়েছে, এগুলোও রিজার্ভ হিসেবে দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

উল্লেখ্য, আকু হলো আন্তঃদেশীয় এক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। আকুর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। এ ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।

এদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) টানা ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে কমে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ বা ১.৫৪ বিলিয়ন ডলার আসে। অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স আরও নিম্নগামী ছিল। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা হিসাবে) এর পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। গত ৮ মাসের মধ্যে এটিই (অক্টোবরের রেমিট্যান্স) প্রবাসীদের পাঠানো সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স।

এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) টানা ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। প্রবাসী আয়ের প্রবাহ কমে যাওয়ায় আগের দুই মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কমে যায় সেপ্টেম্বরে। অক্টোবর মাসে আরও কমলো রেমিট্যান্স। জুলাই মাসে রেমিট্যান্স আসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এর পরের মাস আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। তবে সেপ্টেম্বর মাস থেকে রেমিট্যান্সে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে।


আরও পড়ুন: